ফুলমেহের হত্যার বিচার দাবিতে মানববন্ধন
নরসিংদীতে ফুলমেহের বেগম হত্যার বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করা হয়েছে। আজ বুধবার দুপুরে নরসিংদী প্রেসক্লাবের সামনে তাঁর পরিবারের সদস্যসহ স্থানীয় লোকজন এই মানববন্ধন করেন।
১৭ অক্টোবর বিকেলে নরসিংদী সদর উপজেলার মধ্য শিলমান্দী গ্রামের একটি কলাখেত থেকে ফুলমেহেরের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করা হয়। হত্যাকাণ্ডের পরদিন রাতে তাঁর মেয়ে রত্না আক্তার বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করে নরসিংদী মডেল থানায় মামলা করেন। নিহত ফুলমেহের (৪৭) ওই গ্রামের মৃত আবদুর রহমানের স্ত্রী।
মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য দেন স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য আবদুল করিম সরকার, সংরক্ষিত ইউপি সদস্য সেলিনা বেগম, সাবেক ইউপি সদস্য হিরণ মিয়া, নিহতের মেঝো মেয়ে তানিশা আক্তারের স্বামী সাইফুল ইসলাম, বড় মেয়ে ও মামলার বাদী রত্না আক্তার ও ছোট মেয়ে আনিকা আক্তার।
পুলিশ ও নিহতের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১৭ অক্টোবর দুপুরে ফুলমেহের তাঁর পাঁচটি ছাগলের জন্য ঘাস কাটতে ওই কলাখেতে যান। বিকেলের দিকে স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি ওই নির্জন কলাখেতে তাঁর রক্তাক্ত লাশ পড়ে থাকতে দেখেন। ফুলমেহেরের গলা, ঘাড়, হাত ও পিঠে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন ছিল। পরে সন্ধ্যার দিকে নরসিংদী মডেল থানার পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
মানববন্ধন চলাকালে বক্তারা বলেন, হত্যাকাণ্ডের পরদিন রাতে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা হওয়ার পর সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে মো. খোকন নামের একজনকে দুই দফা আটক করে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু ঘটনার সাত দিন পর সব তথ্য-প্রমাণ হাতে নিয়ে তাঁকে আবার গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তি দিয়ে হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দেন তিনি। গত সোমবার রাতে আদালতে হাজির করা হলে তিনি বিচারকের কাছে হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। ফুলমেহেরকে নৃশংসভাবে হত্যার দায়ে খোকনের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
মামলার বাদী রত্না আক্তার বলেন, ‘তিন বছর আগে এই খোকন আমাদের কলাখেত থেকে বেশ কিছু কলার ছড়ি চুরি করেছিলেন। হাতেনাতে ধরা পড়ে যাওয়ায় স্থানীয় চেয়ারম্যানসহ জনপ্রতিনিধি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা তাঁকে শাস্তি দেন। ওই সময় তাঁর কাছ থেকে জরিমানা আদায় করা হয়েছিল। তিন বছর আগের ওই ঘটনার ক্ষোভ থেকেই আমার মাকে কলাখেতে একা পেয়ে তিনি উপর্যুপরি কুপিয়ে হত্যা করেন। আমরা মায়ের হত্যাকারীর ফাঁসি চাই।’
নরসিংদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সওগাতুল আলম জানান, ফুগুলমেহের হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মো. খোকনকে গ্রেপ্তারের পর আদালতে পাঠানো হয়েছিল। তিনি বিচারকের কাছে হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।