গোপালগঞ্জে অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে বাড়ি বাড়ি ছুটছে ‘বন্ধুমহল’
পাঁচ দিন আগে আসমা বেগমের (৫০) করোনা শনাক্ত হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টায় হঠাৎ শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়। প্রয়োজন হয় অক্সিজেনের। ফোন আসে ‘বন্ধুমহল’ নামের একটি সংগঠনের কাছে। ওই রাতেই দুজন স্বেচ্ছাসেবী পিপিই, মাস্ক পরে কাঁধে অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে মোটরসাইকেলে ছুটে যান মুকসুদপুরের রাঘদী ইউনিয়নের ছাগলছিড়া গ্রামে। অক্সিজেন পেয়ে মায়ের শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয় বলে জানান আসমার ছেলে শাহরিয়ার রহমান।
গোপালগঞ্জে করোনা ও শ্বাসকষ্টের রোগীদের এভাবেই বিনা মূল্যে অক্সিজেন সেবা দেওয়া শুরু করেছেন কয়েকজন বন্ধু। তাঁদের এই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের নাম দেওয়া হয়েছে ‘বন্ধুমহল’। ১৪ লিটারের ৫০টি অক্সিজেন সিলিন্ডার দিয়ে বন্ধুমহলের অক্সিজেন ব্যাংকের যাত্রা শুরু। তারা গোপালগঞ্জের পাঁচটি উপজেলাতেই এ সেবা দিচ্ছে। রয়েছে অ্যাম্বুলেন্স সুবিধাও।
সংগঠনের সদস্যরা জানান, বন্ধুমহলের রয়েছে একাধিক হেল্পলাইন নম্বর। ওই নম্বরে ফোন করলেই পৌঁছে যাচ্ছে অক্সিজেন। ইতিমধ্যে ২৫ জন করোনা রোগীকে বাড়িতে গিয়ে অক্সিজেনের সাপোর্ট দেওয়া হয়েছে। দু-এক সপ্তাহের মধ্যে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা বাড়িয়ে ১০০ করা হবে। এ ছাড়া রোগীর অক্সিজেনের মাত্রা পরিমাপের জন্য আগামী রোববার থেকে ২৫টি অক্সিমিটার যোগ হচ্ছে।
গোপালগঞ্জে দিন দিন করোনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আজ শুক্রবার পর্যন্ত জেলায় ১ হাজার ৩৫৬ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। বর্তমানে সক্রিয় রোগীদের মধ্যে ৬৫ জন হাসপাতালে ভর্তি। বাকিরা বাড়িতে চিকিৎসাধীন।
বন্ধুমহলের সমন্বয়ক গাজী তুষার আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, যাঁরা বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন, তাঁদের অনেকেই শ্বাসকষ্ট রয়েছে। তাঁদের কথা ভেবে সাধারণ মানুষের সহযোগিতা নিয়ে ৫ জুলাই থেকে অক্সিজেন সেবা চালু করেছেন। গুরুতর রোগীদের জন্য একটি অ্যাম্বুলেন্স রেখেছেন। জেলার মধ্যে তাঁদের বিনা খরচে সেবা দেওয়া হবে। তবে জেলার বাইরে গেলে তেল খরচ দিতে হবে।
গাজী তুষার আহমেদ জানান, সমন্বয়ক ও আমাদের স্বেচ্ছাসেবীদের নম্বর ০১৬৭৩৩০৯৬০৬, ০১৭২২০৯৭৬৩৬, ০১৮৬০৪২৪২৪২ সহ ৩০টি হেল্পলাইন নম্বর জেলার পাঁচ উপজেলার ৬৮ ইউনিয়ন ও ৪টি পৌরসভায় দেওয়া আছে। যাঁদের প্রয়োজন হবে কল করলেই অক্সিজেন নিয়ে পৌঁছে যাবেন স্বেচ্ছাসেবীরা।