ইউপি নির্বাচন
প্রতীকী ছবি

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলায় ইউপি নির্বাচন সামনে রেখে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। আজ শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের বাসাবাড়ি পাড়ায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

আহত ব্যক্তিদের মধ্যে নজরুল সরদার (৫৮), ইসমাইল শরীফ (২১), তৌহিদ শরীফ (৩৫), রোমান শরীফ (২৫), হাসাইন খান (১২), জাহাঙ্গীর মিয়া (৪৫) ও জাকারিয়া (২৪)। এই সাতজনকে গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অপর আহত ব্যক্তিদের স্থানীয়ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

স্থানীয় ব্যক্তিরা জানান, পঞ্চম ধাপে ৫ জানুয়ারি গোপীনাথপুর ইউপির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই ইউপিতে আওয়ামী লীগ থেকে কাউকে নৌকা প্রতীক দেওয়া হয়নি, অর্থাৎ নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতা উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে অটোরিকশা প্রতীকে শরীফ আমিনুল হক ওরফে লাচ্চু এবং মোটরসাইকেল প্রতীকে আলমগীর শরীফ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এই দুই স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। শরীফ আমিনুল হক আজ তাঁর সমর্থকদের নিয়ে বাসাবাড়ি এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণায় যান। এ সময় আলমগীর শরীফের সমর্থকদের সঙ্গে তাঁরা বিবাদে জড়িয়ে পড়েন। প্রথমে দুই পক্ষের মধ্যে তর্কবিতর্ক হয় এবং পরে তাঁরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন কর্মী-সমর্থক আহত হন। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

আলমগীর শরীফ অভিযোগ করেন, শরীফ আমিনুল হক কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে বাসাবাড়ি এলাকায় প্রচারণার নামে ভোটারদের টাকা দেন এবং তাঁদের কোরআন শরিফের নামে রেখে শপথ করান।

চেয়ারম্যান প্রার্থী আলমগীর শরীফ অভিযোগ করেন, তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী চেয়ারম্যান প্রার্থী শরীফ আমিনুল হক কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে বাসাবাড়ি এলাকায় প্রচারণার নামে ভোটারদের টাকা দেন এবং তাঁদের কোরআন শরিফের নামে রেখে শপথ করান। একজন ভোটার কোরআন শরিফের নামে শপথ করে টাকা নিতে অস্বীকৃতি জানান। এ নিয়ে ওই ভোটারদের সঙ্গে শরীফ আমিনুলের লোকজনের উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়। পরে এলাকাবাসী খবর পেয়ে সেখানে জড়ো হন এবং তাঁদের প্রচারণা চালাতে বাধা দেন।

শরীফ আমিনুল হক পাল্টা অভিযোগে বলেন, তিনি তাঁর কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে নিয়মমাফিক প্রচারণা চালানোর সময় আলমগীর শরীফের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তাঁদের ওপর অতর্কিত হামলা চালান। এতে তাঁর কয়েকজন কর্মী-সমর্থক গুরুতর আহত হন। এ ছাড়া আলমগীর শরীফের লোকজন বাসাবাড়ি এলাকায় তাঁদের প্রচারণা চালাতে নিষেধ করেন। তাঁরা নারী কর্মীদেরও ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন। বিষয়টি তিনি নির্বাচন কমিশনে লিখিতভাবে জানিয়েছেন।

গোপালগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় এখনো কেউ লিখিতভাবে অভিযোগ করেননি। তবে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে ওই এলাকায় পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।