গ্রামজুড়ে বিষাদের ছাপ

কুষ্টিয়া কুমারখালীর চর মহেন্দ্রপুর গ্রামে একই পরিবারের তিন সদস্য সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হওয়ার পর তাঁদের লাশ বাড়িতে নেওয়া হয়। লাশগুলো দেখে স্বজনেরা আহাজারি করে। আজ মঙ্গলবার তোলা ছবি।
সংগৃহীত

পাশাপাশি তিনটি খাটিয়া রাখা। একটিতে বাবার, একটি ছেলে ও আরেকটিতে মেয়ের লাশ। লাশের এমন সারি এই গ্রামের মানুষ আগে কখনো দেখেনি। সহস্রাধিক মানুষ লাশ দেখতে ভিড় জমায়। সবার চোখমুখে বিষাদের ছাপ। বেদনাদায়ক এ দৃশ্য কুষ্টিয়া কুমারখালী উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের চর মহেন্দ্রপুর গ্রামের।

পুলিশ, স্থানীয় ও পরিবার সূত্র জানায়, গতকাল সোমবার রাতে চর মহেন্দ্রপুর গ্রামের ইসাহক প্রামাণিক (৩৫), তাঁর স্ত্রী রুবিয়া খাতুন (৩০), মেয়ে শিখা (১৩) ও ছেলে জিহাদকে (৭) নিয়ে ঈদের ছুটিতে ঢাকা থেকে বাড়িতে ফিরছিলেন। রাত ১২টার দিকে কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী আঞ্চলিক মহাসড়কের পাংশা আজিজ সরদার মোড়ে সড়ক দুর্ঘটনায় ইসাহক প্রামাণিক এবং তাঁর ছেলে ও মেয়ে নিহত হন।

সোমবার রাতে ইসাহক পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। দৌলতদিয়া ঘাটে আসার পর কোনো গাড়ি না পেয়ে মাহিন্দ্রতে করে বাড়ি ফিরছিলেন তাঁরা। রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার আজিজ সরদার মোড়ে পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা ট্রাকের সঙ্গে ইসাহকের পরিবারের সদস্যদের বহনকারী মাহিন্দ্রের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলে ইসাহক ও তাঁর দুই সন্তান মারা যায় এবং তাঁর স্ত্রী রুবিয়া আহত হন। রুবিয়াকে পাংশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দিয়ে বাড়িতে নিয়ে আসা হয়েছে।

কুষ্টিয়া কুমারখালীর চর মহেন্দ্রপুর গ্রামে একই পরিবারের তিন সদস্য সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হওয়ার পর তাঁদের লাশ বাড়িতে নেওয়া হয়। লাশগুলো দেখতে গ্রামের মানুষ নিহতদের বাড়িতে জড়ো হয়। আজ মঙ্গলবার তোলা ছবি।
সংগৃহীত

ইসাহক প্রামাণিকের চাচাতো ভাই আজাদুর রহমান বলেন, দুই বছর আগে ইসাহক পরিবার নিয়ে জীবিকার তাগিদে ঢাকাতে যান। সাভারে বিভিন্ন জায়গায় তিনি মেলামাইনের পণ্য বিক্রি করতেন। তাঁর স্ত্রী পোশাক কারখানায় কাজ করতেন।

আরও পড়ুন

চরমহেন্দ্রপুর গ্রামের বাসিন্দা ও নিহত ইসাহকের নিকটাত্মীয় জাহিদুল ইসলাম বলেন, গ্রামের মানুষের ঈদের আনন্দ নিমেষেই শেষ হয়ে গেছে। এ রকম লাশের সারি আগে কখনো দেখেনি গ্রামবাসী। দুপুরে জানাজা শেষে লাশ গ্রামের কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।