ঘুমের সময় হইচই করায় ছাত্রদের মারধর, মাদ্রাসাশিক্ষক গ্রেপ্তার

হাতকড়া
প্রতীকী ছবি

ঝালকাঠিতে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটানোয় ১০ শিক্ষার্থীকে মারধর করে গুরুতর জখম করার অভিযোগে মোহাম্মদ উল্লাহ (৪০) নামের এক মাদ্রাসাশিক্ষককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় গতকাল শনিবার রাতে সদর উপজেলার পোনাবালিয়া ইউনিয়নের কে এ খান হাফেজি মাদ্রাসার অভিযুক্ত শিক্ষককে এলাকাবাসী পুলিশে সোপর্দ করেন।

পরে ওই দিন রাতেই নির্যাতনের শিকার আমিনুল ইসলাম (১১) নামের এক শিক্ষার্থীর বাবা মো. শামীম খলিফা ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে সদর থানায় একটি মামলা করেন। পুলিশ সেই মামলায় অভিযুক্ত ওই শিক্ষককে গ্রেপ্তার করেছে।

পুলিশ ও এলাকাবাসী জানান, সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে মাদ্রাসা খোলা রেখে পড়াশোনা চালিয়ে আসছিলেন মাদ্রাসার একমাত্র শিক্ষক মোহাম্মদ উল্লাহ। শনিবার বেলা তিনটার দিকে শিশু-কিশোর বয়সী শিক্ষার্থীরা হইচই করছিল।

এতে মোহাম্মদ উল্লাহর ঘুম ভেঙে গেলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে কক্ষের দরজা আটকে ১৩ শিক্ষার্থীর মধ্যে ১০ জনকে বেধড়ক মারধর করেন। এতে শিক্ষার্থীরা ব্যথায় কান্নাকাটি করতে থাকলেও ওই কক্ষের ভেতরে সবাইকে আটকে রেখে বাইরে থেকে তালা ঝুলিয়ে দেন মোহাম্মদ উল্লাহ। মারধরের বিষয়টি কাউকে না বলার জন্য সবাইকে ভয়ভীতি দেখান তিনি।

এদিকে মাগরিবের নামাজের সময় ওই মাদ্রাসার শিক্ষার্থী মো. সিয়াম (৯) কৌশলে ভেন্টিলেটর দিয়ে পালিয়ে পোনাবালিয়া বাজারে গিয়ে এলাকাবাসীকে বিষয়টি জানায়। এরপর পোনাবালিয়া বাজারের শতাধিক মানুষ মোহাম্মদ উল্লাহকে আটক করেন।

এ সময় গুরুতর জখম হওয়া আমিনুল ইসলাম (১১), মো. সিয়াম (৯), মো. আমিনুল (৯) ও মো. ইয়াছিনকে (১৪) উদ্ধার করে স্থানীয় পল্লিচিকিৎসকের কাছে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন এলাকাবাসী। তাদের মধ্যে গুরুতর আহত সিয়ামকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়।

খবর পেয়ে রাতেই ঝালকাঠি সদর থানা-পুলিশ ওই মাদ্রাসায় গিয়ে শিক্ষক উল্লাহকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খলিলুর রহমান বলেন, শিক্ষার্থীদের নির্যাতনের অভিযোগে এক অভিভাবক নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেছেন। এই মামলায় অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। আজ রোববার তাঁকে আদালতে নেওয়া হবে।