বিশ্ববিদ্যালয়ছাত্রীর মৃত্যু
চট্টগ্রামে নির্যাতনে স্ত্রীকে হত্যা মামলায় আইনজীবী স্বামীর এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর
চট্টগ্রামে নির্যাতন করে স্ত্রীকে হত্যার মামলায় স্বামী আনিসুল ইসলাম (৩২) নামের এক আইনজীবীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ বুধবার চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহনাজ রহমান শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) কামরুল হাসান প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গ্রেপ্তার আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চান্দগাঁও থানা-পুলিশ পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে। আদালত এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
গত রোববার রাতে নগরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে মাহমুদা খানম আঁখি নামের এক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মারা যান। স্বামীর নির্যাতনে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় করা হত্যা মামলায় ওই দিনই তাঁর স্বামী আনিসুলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
মাহমুদা চট্টগ্রাম নগরের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তাঁর স্বামী চট্টগ্রাম আদালতে আইনজীবী হিসেবে কর্মরত। আনিস-মাহমুদা দম্পতির গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের বাঁশখালীর জলদি গ্রামে। তাঁরা চট্টগ্রাম নগরের চান্দগাঁও থানার পাঠানের গোদা এলাকায় বসবাস করতেন।
মাহমুদার বড় ভাই মিজানুর রহমান প্রথম আলোর কাছে অভিযোগ করে বলেন, দুই বছর আগে আনিসুলের সঙ্গে মাহমুদার বিয়ে হয়। ভালোবেসে তাঁরা বিয়ে করেছিলেন। এতে তাঁদের (মাহমুদার পরিবার) সম্মতি ছিল না। তাঁরা মাহমুদাকে পরিবারে ফিরিয়ে নিলেও তিনি আবার স্বামীর কাছে চলে যান। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই তাঁকে ১০ লাখ টাকা যৌতুকের জন্য নির্যাতন করে আসছিলেন স্বামী। নির্যাতনের একপর্যায়ে রোববার গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন মাহমুদা। হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
মিজান মামলার এজাহারেও এসব অভিযোগ করেছেন। মাহমুদার মা রোখসানা বেগমের অভিযোগ, ছয় মাস আগে আনিসুল মাহমুদার মুঠোফোন কেড়ে নেন। এর পর থেকে মাহমুদার ওপর নির্যাতনের কথা জানতে পারতেন না তাঁরা।
আজ রিমান্ড আবেদনের শুনানিতে পুলিশের পক্ষ থেকে আদালতকে বলা হয়, যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে নির্যাতন করতেন আসামি আনিসুল। তাঁর নির্যাতনে স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে। বিষয়টি সম্পর্কে আরও পরিষ্কার করে জানতে তাঁকে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন।
এদিকে রিমান্ড বাতিলের আবেদন করে আনিসুলের আইনজীবীরা শুনানিতে আদালতকে বলেন, মাহমুদার সঙ্গে দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল আনিসুলের। এ সম্পর্কে মাহমুদার মা ও ভাই রাজি ছিলেন না। তাঁরা জোর করে মাহমুদাকে অন্য জায়গায় বিয়ে দেন। পরে সেখানে বিবাহবিচ্ছেদ ঘটিয়ে মাহমুদা আনিসের কাছে চলে যান। আনিস ও মাহমুদা স্বেচ্ছায় বিয়ে করায় তা মেনে নেয়নি মাহমুদার পরিবার। এ কারণে পরিবারের সঙ্গে মাহমুদার যোগাযোগ ছিল না। ঘটনার দিন অসুস্থ হয়ে পড়লে মাহমুদাকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন আনিসুল নিজেই।
আনিসুলের আইনজীবী আনোয়ার সাদত বলেন, যৌতুক চাওয়া ও নির্যাতনের দাবি সম্পূর্ণ মিথ্যা।