চন্দ্রায় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে যানজট, থেমে থেমে চলছে গাড়ি

ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার হিসেবে পরিচিত গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা ত্রিমোড় ও আশপাশের এলাকায় ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। আজ মঙ্গলবার ভোররাত থেকে এই অবস্থা। থেমে থেমে যানবাহন চলাচল করছে। এ ছাড়া যানবাহন না পেয়ে ঘরমুখী শত শত মানুষকে চন্দ্রা বাসস্ট্যান্ডে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। উভয় দিকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।

এদিকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সড়কে স্বাস্থ্যবিধির কোনো বালাই নেই বললেই চলে। দূরপাল্লার যানবাহনগুলো স্বাস্থ্যবিধি কিছুটা মানলেও ছোট পরিবহনগুলো তা একেবারেই মানছে না। মানুষ ঠাসাঠাসি করে যে যেভাবে পারছে চলাফেরা করছে। অনেকের মুখে মাস্কও দেখা যায়নি।

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা ত্রিমোড় এলাকা থেকে গাজীপুরের কড্ডা পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার, চন্দ্রা-নবীনগর সড়কের নবীনগর পর্যন্ত এবং টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার গোড়াই পর্যন্ত দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে থানা-পুলিশ, ট্রাফিক পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশ দায়িত্ব পালন করলেও তারা যানজটের কাছে অসহায় হয়ে পড়েছে। চন্দ্রা ত্রিমোড় এলাকার উড়ালসড়কও যানজটে স্থবির হয়ে পড়েছে। চন্দ্রা ত্রিমোড় এলাকায় আশপাশের শিল্পকারখানার শত শত শ্রমিক বাড়ি যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু পর্যাপ্ত যানবাহন না থাকায় বিপাকে পড়েছেন তাঁরা। যানজট তো আছেই।

চন্দ্রা ত্রিমোড় এলাকায় বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন সিরাজগঞ্জের বেলকুচি এলাকার বাসিন্দা আশরাফুল ইসলাম। তিনি বলেন, ভোর পৌনে পাঁচটায় চন্দ্রায় এসে পৌঁছেছেন। কিন্তু কোনো যানবাহন না পেয়ে স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে অপেক্ষা করতে হচ্ছে তাঁকে।

দিনাজপুরের ফুলবাড়িয়া এলাকার বাসিন্দা আজমল হোসেন গাড়ি না পেয়ে গরু নিয়ে এসে ফেরত যাওয়া একটি ট্রাকের ওপরে বসে আছেন। তিনি বলেন, ‘সড়কে গাড়ির অভাব নেই। কিন্তু আমাদের যাওয়ার মতো কোনো গাড়ি নেই। তাই বাধ্য হয়ে ট্রাকে করে যেতে হচ্ছে।’ এই ট্রাকে থাকা বগুড়ার এলাকার বাসিন্দা মোশারফ হোসেন বলেন, ট্রাক ছাড়া যাওয়ার কোনো উপায় পাচ্ছেন না। তাই বাসের সমান ভাড়া দিয়ে ট্রাকে করে বাড়ি যাচ্ছেন। মাঝেমধ্যে বৃষ্টিতে ভিজতে হচ্ছে বলে জানালেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গতকাল সোমবার দুপুরের পর থেকে সড়কে যানবাহনের চাপ কয়েক গুণ বেড়ে যায়। এ কারণে যানজট পুলিশের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। অনেকেই বলছেন, টাঙ্গাইলের যমুনা সেতু থেকে যানজট শুরু হয়ে চন্দ্রা পর্যন্ত পৌঁছে গেছে। এদিকে বৃষ্টির কারণে যানবাহনগুলো গতি পাচ্ছে না। এতেও যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।

কোনাবাড়ী হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর গোলাম ফারুক বলেন, সড়কের অবস্থা খুব একটা ভালো নয়। চন্দ্রা থেকে সবদিকেই যানজট। তবে চন্দ্রা থেকে থেমে টাঙ্গাইলের দিকে যানবাহন চলছে। যানজটে আটকা পড়ে ঘরমুখী মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।