চলন্ত ট্রেন থেকে কিশোরকে ধাক্কা, যুবককে পিটিয়ে পুলিশে সোপর্দ

ট্রেন
প্রতীকী ছবি

ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রাম মেইল ট্রেনের যাত্রী ছিলেন চার কিশোর-যুবক। তাঁরা ট্রেনটির একটি বগির দরজার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেদের মধ্যে কথা বলছিলেন। গাজীপুরের পুবাইল রেলস্টেশন অতিক্রম করার পর তাঁদের মধ্যে এক কিশোর সিগারেট ধরায়। এ নিয়ে ট্রেনটির দরজায় দাঁড়িয়ে থাকা অন্য এক যুবকের সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হয়। অল্প সময়ের মধ্যেই তা হাতাহাতিতে গড়ায়। কালিগঞ্জের দড়িপাড়া রেলগেট পার হওয়ার সময় উত্তেজিত অবস্থায় কিশোরকে ধাক্কা দেন ওই যুবক। চলন্ত ট্রেনের দরজা থেকে বাইরে ছিটকে পড়ে কিশোর।

ঘটনাটি ঘটে গত শনিবার রাতে। এই ঘটনায় ট্রেনটির ওই বগির কিছু যাত্রী ক্ষুব্ধ হয়ে যুবককে পিটুনি দেন। পরে ট্রেনটি রাত সাড়ে ১২টায় নরসিংদী রেলস্টেশনে যাত্রাবিরতি দিলে যুবককে রেলওয়ে ফাঁড়ির পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এ সময় ছিটকে পড়া কিশোরের খোঁজ করা হয়। প্রায় ১৮ ঘণ্টার চেষ্টায় কিশোরকে খুঁজে না পেয়ে ফাঁড়ি হেফাজতে থাকা যুবককে গতকাল রোববার সন্ধ্যায় ভৈরব রেলওয়ে থানায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

নিখোঁজ কিশোরের নাম শান্ত মিয়া (১৫)। আর আটক যুবকের নাম হালিম মিয়া (২৪)। হালিমের বাড়ি নরসিংদীর রায়পুরার আশরাফপুর গ্রামে। শান্তর সঙ্গে ট্রেনে অবস্থান করছিলেন রাকিব হোসেন (২১), মুছা আলী (২৪) ও বিপ্লব হোসেন (২১)। তাঁরা পুলিশকে জানান, ভাসমান শ্রমিক হিসেবে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জায়গায় কাজ করেছেন। তাঁরা কেউই পরস্পরকে ভালো করে চেনেন না, শুধু নাম জানেন। তাঁরা একসঙ্গে আখাউড়ায় যাচ্ছিলেন বিল্লাল নামের এক ব্যক্তির ইটের ভাটায় কাজ করার জন্য। শান্তর বাড়ি নরসিংদীতে, রাকিবের লক্ষ্মীপুরে, মুছার মুন্সিগঞ্জে ও বিপ্লবের বাড়ি যশোরে।

নরসিংদী রেলওয়ে ফাঁড়ি পুলিশ জানিয়েছে, পুবাইল স্টেশনের মাস্টার কামরুল ইসলাম পুলিশকে জানান কিশোরের ছিটকে পড়ার বিষয়টি প্রত্যক্ষ করেছেন দড়িপাড়া রেলগেটের কিপার আপন মিয়া। পরে আপন মিয়ার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ছিটকে পড়ার পর ওই কিশোর খুব বেশি আহত হয়নি। তাকে দৌড়ে আবার ওই ট্রেনে ওঠার চেষ্টা করতে দেখেছেন তিনি। এরপরও ঘটনাস্থলের আশপাশে প্রায় সাড়ে চার কিলোমিটার অংশে কোনো লাশ বা আহত কেউ পড়ে আছেন কি না খুঁজে দেখা হয়। কিন্তু চলন্ত ট্রেন থেকে ছিটকে পড়া ওই কিশোরকে পাওয়া যায়নি।

ভৈরব রেলওয়ে থানার ওসি ফেরদৌস আহমেদ জানান, যেহেতু এই ঘটনায় ভুক্তভোগী কিশোর বা লিখিত কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তাই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।