চার দাবিতে বেনাপোল স্থলবন্দরে বুধবার থেকে কর্মবিরতির ডাক
চার দফা দাবিতে যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরে আগামীকাল বুধবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে বেনাপোল ট্রান্সপোর্ট এজেন্সি মালিক সমিতি। আজ মঙ্গলবার দুপুরে সমিতির কার্যালয়ে সাংবাদ সম্মেলনে এ কর্মবিরতির ঘোষণা দেওয়া হয়।
ট্রান্সপোর্ট এজেন্সি মালিক সমিতির দাবিগুলো হচ্ছে স্থলবন্দরের উপপরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবীর তরফদারকে প্রত্যাহার, বন্দরে পর্যাপ্ত ইকুইপমেন্ট সরবরাহসহ দক্ষ চালক নিয়োগ, বন্দরে পর্যাপ্ত শেড ও জায়গা বৃদ্ধি এবং বন্দর এলাকা যানজটমুক্ত রাখা। সংবাদ সম্মেলনে সমিতির সাধারণ সম্পাদক আজিম উদ্দিন গাজী এসব দাবি তুলে ধরেন।
লিখিত বক্তব্যে আজিম উদ্দিন গাজী বলেন, বেনাপোল বন্দরের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকার প্রতিবছর প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করে থাকে। কিন্তু বন্দরে পর্যাপ্ত ইকুইপমেন্ট (ক্রেনের মতো সরঞ্জাম) না থাকার কারণে পণ্য ওঠানো-নামানো চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। গত ১৬ মের মধ্যে এসব সরঞ্জামের ব্যবস্থা করা না হলে ১৭ মে থেকে পণ্য পরিবহন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছিল। এরই পরিপ্রেক্ষিতে স্থলবন্দরের উপপরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবীর তরফদারের সভাপতিত্বে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ৩১ মের মধ্যে বন্দরে তিনটি নতুন ক্রেন ও তিনটি নতুন ফর্কলিফট সরবারহ এবং দক্ষ চালক নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। সেই শর্তে ওই আন্দোলন স্থগিত করা হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত বন্দরে কোনো প্রত্যাশিত সরঞ্জাম সরবরাহ করা হয়নি।
আজিম উদ্দিন গাজী বলেন, দাবি আদায়ের জন্য বেনাপোল স্থলবন্দর ব্যবহারকারী বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা করে আগামীকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি পালন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। এ সময় আমদানি-রপ্তানিসহ সব ধরনের পণ্য পরিবহন বন্ধ থাকবে।
উপপরিচালকের প্রত্যাহারের দাবির বিষয়ে আজিম উদ্দিন গাজী বলেন, মামুন কবীর তরফদার বন্দরের দরপত্রসহ বিভিন্ন কার্যক্রমে তাঁর নিজস্ব লোক ও আত্মীয়স্বজনদের নিয়োগ দিচ্ছেন। তিনি বেনাপোল বন্দরটাকে ধ্বংসের পাঁয়তারা করছেন। এমন কোনো দুর্নীতি নেই, যেখানে মামুন কবীর তরফদার জড়িত নেই। তাঁকে এ বন্দর থেকে প্রত্যাহার করা না হলে বন্দরের উন্নয়ন সম্ভব নয়। যতক্ষণ পর্যন্ত চার দফা দাবি আদায় না হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত কর্মবিরতি চলবে বলেও ঘোষণা দেন আজিম উদ্দিন।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে স্থলবন্দরের উপপরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবীর তরফদার বলেন, তাঁদের দাবিগুলো তো এক রাতের মধ্যে সমাধান করা সম্ভব নয়, এ জন্য সময় লাগবে। তারপরও তাঁরা দ্রুত সমস্যা নিরসনের চেষ্টা করছেন। তাঁকে প্রত্যাহারের বিষয়ে মামুন কবীর বলেন, ট্রান্সপোর্ট এজেন্সি মালিক সমিতি কেন তাঁর বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ তুলল, তা তিনি বুঝতে পারছেন না।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বেনাপোল ট্রান্সপোর্ট এজেন্সি মালিক সমিতির সভাপতি এ কে এম আতিকুজ্জামান, সহসভাপতি ইদ্রিস আলী ও মশিয়ার রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খায়রুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক সাজেদুর রহমান, অর্থ সম্পাদক মুছা করিম, দপ্তর সম্পাদক জহিরুল ইসলাম, কার্যকরী সদস্য রাজু আহম্মেদ, আহসান হাবিব প্রমুখ।