চার বছর পর জানা গেল, বাবার মৃত্যু হয়েছে ছেলের বাঁশের আঘাতে
রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার দেলদার মিয়া (৬০) নামের এক ব্যক্তির মৃত্যু কারণ চার বছর পর উদ্ঘাটন হওয়ার দাবি করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। সংস্থাটি জানিয়েছে, দেলদার মিয়া তাঁর ছেলে সোহেল মিয়ার (৩৭) বাঁশের আঘাতে মারা গেছেন। গত রোববার রাতে পীরগঞ্জের গুর্জিপাড়া এলাকা থেকে সোহেলকে আটক করে পুলিশ। এরপর আদালতে ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দিতে তিনি হত্যার দায় স্বীকার করেছেন বলে আজ মঙ্গলবার পিবিআইয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়।
২০১৮ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি পীরগঞ্জ উপজেলার চাপাবাড়ি গ্রামের একটি বাঁশঝাড় থেকে দেলদার মিয়াকে অচেতন অবস্থায় পাওয়া যায়। তাঁকে রক্তাক্ত অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায় স্থানীয় লোকজন। অবস্থার অবনতি হলে নেওয়া হয় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরদিন মারা যান তিনি। এ ঘটনায় রংপুর কোতোয়ালি থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়।
দেলদার মিয়ার মৃত্যুর পর আদালতের নির্দেশে ওই অপমৃত্যু মামলার তদন্ত দেওয়া হয় পিবিআইকে। মামলাটির তদন্ত করেন পিবিআইয়ের উপপরিদর্শক (এসআই) শফিউল আলম।
পিবিআইয়ের রংপুর জেলার পুলিশ সুপার এ বি এম জাকির হোসেনের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঘটনার দিন ২০ ফেব্রুয়ারি বাঁশঝাড়ে বাঁশ কাটা নিয়ে বাবার সঙ্গে ছেলের ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে বাঁশ দিয়ে ছেলে সোহেল মিয়া বাবার মাথায় আঘাত করলে দেলদার মিয়া সেখানে লুটিয়ে পড়েন। এরপর ছেলে সোহেল মিয়া বাড়ি থেকে পালিয়ে যান। গা ঢাকা দিয়ে ঢাকা শহরে এসে রিকশা চালানোসহ বিভিন্ন দোকানের কর্মচারীর কাজ করেন সোহেল। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ জানতে পারে, সোহেল মিয়া ঢাকা থেকে পীরগঞ্জে বাড়ির পাশের একটি গ্রামে এসেছেন। রোববার রাতে অভিযান চালিয়ে তাঁকে গুর্জিপাড়া এলাকা থেকে আটক করা হয়।
পিবিআই রংপুর জেলার পুলিশ সুপার এ বি এম জাকির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, পরিবারের লোকজন সহায়তা না করায় মামলার রহস্য উদ্ঘাটনে সময় লেগেছে। চার বছর পর হলেও এলাকার মানুষ সত্য জানতে পেরেছে। এটি সম্ভব হয়েছে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন ও ছেলে সোহেল মিয়ার পলাতক থাকার কারণে।
গুর্জিপাড়ার স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, দেলদার মিয়া মারা যাওয়ার পর তাঁর ছেলে সোহেল ঢাকায় চলে যান। তবে মাঝেমধ্যে বাড়িতে আসতেন। দেলদার মিয়ার মৃত্যুর বিষয়টি ওই সময় ব্যাপক আলোচিত হয়েছিল।