সুনামগঞ্জ-জামালগঞ্জ সড়কটি গত বছরের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর সংস্কারকাজ হয়েছিল চার মাস আগে। কিন্তু এখনই সড়কের বিভিন্ন স্থানে বিটুমিন উঠে সৃষ্টি হয়েছে অসংখ্য খানাখন্দ ও গর্তের। ভাঙাচোরা সড়কে যানবাহন চলে হেলেদুলে। এতে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে মানুষ।
সড়কের আবদুস জহুর সেতুর মোড় থেকে টুকেরবাজার পর্যন্ত তিন কিলোমিটার অংশে খানাখন্দ বেশি।
এলাকার কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ওই সড়ক দিয়ে জামালগঞ্জ উপজেলার মানুষ সুনামগঞ্জ জেলা শহরে যাতায়াত করে। সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার গৌরারং ইউনিয়নের মানুষকে এই সড়ক হয়েই শহরে যাতায়াত করতে হয়। আবার বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা ফতেপুর ইউনিয়নের একাংশের লোকজনের জেলা শহরে চলাচলের সড়কও এটি। এটি একটি ব্যস্ততম সড়ক। অনেক পণ্যবাহী যান চলাচল করে সড়ক দিয়ে। গত বছর বন্যায় সড়কের বিভিন্ন স্থান প্লাবিত হয়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়।
এখনই সড়কের বিভিন্ন স্থানের পিচ উঠে গেছে। ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে অনেক স্থানে। চলতি বছরের মার্চ মাসে সড়কটির সংস্কারকাজ করে সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তর। কিন্তু এই সংস্কারকাজ চার মাসও টেকেনি। এখনই বিভিন্ন স্থানে পিচ উঠে গেছে। বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এসব গর্তে বৃষ্টি পানি জমে থাকে। এতে মানুষকে যাতায়াতের ক্ষেত্রে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
সড়কের পাশের সদর উপজেলার জগাইরগাঁও গ্রামের একাধিক ব্যক্তি জানান, কাজ করার সময়ই তাড়াহুড়া হয়েছে। কোনো রকমে বিটুমিনের প্রলেপ দেওয়া হয়েছে। যে কারণে জোড়াতালির কাজ টেকেনি। এলাকাবাসী আবার দুর্ভোগে পড়েছে। স্থানীয় টুকেরবাজার গ্রামের বাসিন্দা শুকুর আলী বলেন, ‘কয় মাস অইল কাম করছে। এর মাঝেই সব শেষ। কাম ভালা অইছে না, এর লাগিই টিকছে না।’
অটোরিকশাচালক মহিবুর রহমান জানান, ভাঙাচোরা সড়কের কারণে তাঁদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়, সময় বেশি লাগে। আবার গর্তে পানি জমে থাকায় অনেক সময় দুর্ঘটনাও ঘটে। সড়কে পানি জমে থাকায় পথচারীদেরও সমস্যায় পড়তে হয়।
জগাইরগাঁও গ্রামের বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু সুফিয়ান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘এটি আমাদের চলাচলের মূল সড়ক। বছর বছর ভাঙে আর জোড়াতালি দিয়ে সংস্কারকাজ হয়। কী কাজ করল যে চার মাসও টিকল না। নিশ্চয়ই কাজে গাফিলতি ছিল। বৃষ্টি হলে বিটুমিনের কাজে ক্ষতি হয় বেশি, এবার তো বৃষ্টিও কম হয়েছে। এখন আবার দেখছি কিছু লোক সড়কের বিভিন্ন স্থানে কাজ শুরু করেছে। কাজটি যেন স্থায়ী হয়, আবার ভেঙে না যায়, সেদিকে সংশ্লিষ্টদের খেয়াল রাখতে হবে।’
এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জ সওজ অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, সুনামগঞ্জে প্রচুর বৃষ্টি হয়। অতিবৃষ্টিতে সড়কের বিটুমিনের ক্ষতি হয় বেশি। সড়কের বিভিন্ন স্থানে পানি জমে থাকে। ক্ষতিগ্রস্ত জায়গাগুলো দ্রুত মেরামতের জন্য ঠিকাদারের লোকজনকে বলা হয়েছে। তাঁরাও কাজ শুরু করেছেন।