মহিলা অধিদপ্তরের বিক্রয়কেন্দ্র
চার মাসে কোনো বিক্রি নেই, উদ্যোক্তারা হতাশ
বিক্রয়কেন্দ্রের জায়গা ভবনের চারতলায়। সেখানে লিফট নেই। ক্রেতারা যেতে আগ্রহী হন না।
চুয়াডাঙ্গায় মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের বিক্রয়কেন্দ্র নিয়ে উদ্যোক্তারা হতাশ হয়ে পড়েছেন। নারীদের জন্য আয়বর্ধক (আইজিএ) প্রশিক্ষণ প্রকল্পের আওতায় পাঁচ মাস আগে কেন্দ্রটি চালু হয়। গত চার মাসে এ কেন্দ্রের কোনো পণ্য বিক্রি হয়নি।
এদিকে বিক্রয়কেন্দ্রটির ভাড়া, বিদ্যুৎ ও পানির বিল বাবদ প্রতি মাসে প্রায় ২২ হাজার টাকা ব্যয় হচ্ছে, যা পরিশোধ করা হচ্ছে সরকারি কোষাগার থেকে।
কেন্দ্রটির উদ্যোক্তাদের অভিযোগ, উপপরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মাকসুরা জান্নাত একক সিদ্ধান্তে বহুতল ভবনের চারতলায় বিক্রয়কেন্দ্রের জায়গা নির্বাচন করেন। ওই ভবনে লিফট নেই। ক্রেতারা সেখানে যেতে আগ্রহী হন না।
চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি চুয়াডাঙ্গা শহরের শহীদ রবিউল ইসলাম সড়কে বিশ্বাস টাওয়ারের চারতলায় স্থানীয় নারী উদ্যোক্তাদের তৈরি পোশাক ও পণ্যের বাজার সৃষ্টির লক্ষ্যে বিক্রয় ও প্রদর্শনকেন্দ্রের যাত্রা শুরু হয়। ভবনটির মালিক সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আসাদুল হক বিশ্বাস।
তৎকালীন জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার প্রধান অতিথি হিসেবে কেন্দ্রটির উদ্বোধন করেন। ওই অনুষ্ঠানে তিনি কেন্দ্রটির জায়গা নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তখন মাকসুরা জান্নাত আশ্বাস দিয়ে বলেছিলেন, ব্যবসার জন্য উপযুক্ত জায়গা খুঁজে পেলে গুরুত্বের সঙ্গে তা বিবেচনা করা হবে। তবে পাঁচ মাসে নতুন জায়গা নির্বাচনের কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে অধিদপ্তরের একাধিক কর্মচারী অভিযোগ করেন, কেন্দ্রের সৌন্দর্যবর্ধন ও শীতাতপনিয়ন্ত্রণে পাঁচ লাখ টাকা বরাদ্দ ছিল। তবে বেশির ভাগ টাকা খরচ না করে আত্মসাৎ করা হয়েছে। একটি শীতাতপনিয়ন্ত্রণ (এসি) যন্ত্র, টেবিল-চেয়ার ও পোশাক রাখার যে তাক রয়েছে, তাতে কোনোভাবেই দুই লাখ টাকার বেশি খরচ হয়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রথমে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে একটি ছয়তলা ভবনের দোতলায় ওই বিক্রয়কেন্দ্রের জন্য জায়গা পছন্দ করা হয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত মাকসুরা জান্নাত বিশ্বাস টাওয়ারের চারতলা পছন্দ করেন। যেখানে ক্রেতা তো দূরে থাক, বিক্রেতা-উদ্যোক্তারাই নিয়মিত যান না।
কেন্দ্রটি চালুর পর জানুয়ারি মাসে উদ্যোক্তাদের তৈরি ৫টি থ্রি-পিস, ১টি ওয়ান-পিস, ১টি শাড়ি ও ১টি ব্লাউজ পিস বিক্রি হয়, যার বিক্রয়মূল্য ছিল ৯ হাজার ৭৫০ টাকা। ৩ ফেব্রুয়ারি ৫০০ টাকার ১টি থ্রি-পিস বিক্রি হয়। এরপর গত চার মাসে আর কিছু বিক্রি হয়নি। ১০ শতাংশ কমিশন হিসেবে পাঁচ মাসে কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লিজা হোসাইন, তাঁর দুই সহকর্মী আসমা খাতুন ও শিউলী খাতুনের আয় হয়েছে এক হাজার টাকা। বাড়ি থেকে ওই কেন্দ্রে যাতায়াতে তাঁদের খরচও ওঠেনি। ওই তিন কর্মী ন্যূনতম আর্থিক সুবিধা পাচ্ছেন না।