চিঠি পেয়ে এলাকা ছাড়লেন নেত্রকোনার সাংসদ ওয়ারেসাত

ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল
ছবি: সংগৃহীত

এলাকায় অবস্থান করে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগের পরিপ্রক্ষিতে চিঠি পেয়ে এলাকা ছাড়েন নেত্রকোনা-৫ (পূর্বধলা) আসনের সাংসদ ওয়ারেসাত হোসেন বীর প্রতীক। তিনি এই আসনের টানা তিনবারের সাংসদ ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি।

সাংসদের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ করেছেন বৈরাটি ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মুহাম্মদ আনিসুজ্জামান তালুকদার। তিনি আনারস প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তিনি গতকাল মঙ্গলবার জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

লিখিত অভিযোগে আনিসুজ্জামান তালুকদার বলেন, সাংসদ ওয়ারেসাত হোসেন গত বৃহস্পতিবার থেকে তাঁর নির্বাচনী এলাকায় অবস্থান করছেন। তিনি বৈরাটি ইউনিয়নে তাঁর পছন্দের আওয়ামী লীগের প্রার্থী আলী আহম্মদের হয়ে নির্বাচনী বিভিন্ন সভা-সমাবেশ ও প্রচার–প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন। তাঁর হয়ে প্রকাশ্যে ভোট চাইছেন। সাংসদের প্রশ্রয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও তাঁর সমর্থকেরা তাঁর কর্মী–সমর্থকদের ভয়-ভীতি দেখাচ্ছেন ও হুমকি দিচ্ছেন। এতে করে তিনি সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শঙ্কিত।

এ বিষয়ে আনিসুজ্জামান তালুকদার আজ বুধবার বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, ‘সাংসদ ওয়ারেসাত হোসেন নিজ এলাকায় এসে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে সরাসরি নৌকার প্রার্থীর হয়ে ভোট চাচ্ছেন। এ বিষয়ে আমি নির্বাচন কার্যালয়সহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।’

দল সূত্রে জানা গেছে, সাংসদ ওয়ারেসাত হোসেন গতকাল মঙ্গলবার রাতে এলাকা ছেড়ে ঢাকায় চলে গেছেন। এ সম্পর্কে জানতে আজ বুধবার বিকেল সোয়া তিনটার দিকে তাঁকে মুঠোফোনে কল করা হলে তিনি সাড়া দেননি।

নেত্রকোনা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শেখ আবদুল লতিফ বলেন, ‘এ–সংক্রান্ত একটি লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পরপর গতকাল বিকেলে সাংসদকে এলাকা ছাড়তে অনুরোধ করে চিঠি দেওয়া হয়। চিঠি পাওয়ার পর তিনি গতকাল সন্ধ্যায় এলাকা থেকে চলে গেছেন বলে শুনেছি।’

বিদ্রোহী প্রার্থী আনিসুজ্জামান তালুকদারের লিখিত অভিযোগ ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের সময়ও সাংসদ ওয়ারেসাতের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়। ২০১৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন কমিশন সচিবালয় থেকে সাংসদকে এলাকা ছাড়তে বলা হয়। সাংসদ তখন এলাকা ছাড়লেও নির্বাচনের তিন দিন আগে আবার নির্বাচনী এলাকায় অবস্থান নেন। পরে নির্বাচন কমিশন সচিবালয় থেকে নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছিল। এ ঘটনায় সাংসদের বিরুদ্ধে ওই বছরের ১৬ জুন তৎকালীন জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা আবদুল্যাহ আল মোতাহসিম বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন।