চুয়াডাঙ্গায় কালবৈশাখীর তাণ্ডব, গাছচাপায় নারীর মৃত্যু
চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলায় গতকাল বৃহস্পতিবার কালবৈশাখীর তাণ্ডবে শতাধিক ঘরবাড়ি ও গাছপালা ভেঙে পড়েছে। গাছচাপায় মারা গেছেন একজন নারী। এ ছাড়া জেলার বিভিন্ন স্থানে বিক্ষিপ্তভাবে দমকা হাওয়া ও শিলাবৃষ্টি হয়েছে। এতে উঠতি ফসলের ক্ষতি হয়।
চুয়াডাঙ্গার কেদারগঞ্জে অবস্থিত প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সামাদুল হক জানান, গতকাল জেলায় ঝড়ের গতিবেগ ঘণ্টায় ৬৪ কিলোমিটার রেকর্ড করা হয়েছে।
গাছচাপায় মারা যাওয়া নারীর নাম মোমেনা খাতুন (৫০)। তিনি কুড়ুলগাছি গ্রামের আমিরুল ইসলামের স্ত্রী। আমিরুল এ সময় বাঁ পায়ে আঘাত পান। সরেজমিনে জানা যায়, ভূমিহীন আমিরুল ইসলাম ২০ বছরের বেশি সময় ধরে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে সরকারের খাসজমিতে বাড়ি তৈরি করে বসবাস করে আসছেন।
আমিরুল বলেন, গতকাল তিনি নিজে ও স্ত্রী মোমেনা মাগরিবের নামাজ শেষে ঘরের বারান্দায় বসে ইফতারের বাকি অংশ খাওয়া শুরু করেন। এ সময় আকস্মিক ঝড়ে ঘরের পেছনের দুটি লিচুগাছ মাঝখান থেকে ভেঙে তাঁদের বারান্দার চালের ওপর পড়ে। এ সময় মোমেনা তাঁকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেন। কিন্তু নিজে গাছচাপা পড়ে ঘটনাস্থলে মারা যান।
দর্শনা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আমানউল্লাহ আমান জানান, নিহত ব্যক্তির লাশ সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি শেষে রাতেই স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
কুড়ুলগাছি ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন বলেন, নিহত মোমেনা খাতুনের লাশ আজ শুক্রবার সকালে গ্রামের কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতার পাশাপাশি ঘর তৈরি করে দেওয়া হবে।
স্থানীয় লোকজন বলেন, উপজেলার হাউলী ইউনিয়নের রুদ্রনগর গ্রামে গতকাল কালবৈশাখীর তাণ্ডবে অন্তত ১৫০টি ঘরবাড়ি, গাছপালা, পানের বরজ ও উঠতি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। জেলার বিভিন্ন স্থানে বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টির পাশাপাশি কালবৈশাখী আঘাত হেনেছে। এতে উঠতি ফসলসহ আমের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খান বলেন, নিহত মোমেনা বেগমের পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতা করা হবে। এ ছাড়া ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের তালিকা তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তালিকা হাতে পেলে ত্রাণসহায়তা দেওয়া হবে।