চুয়াডাঙ্গায় শীতের সকালে ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের ভিড়

শীত উপেক্ষা করে পুরুষ ভোটারদের পাশাপাশি নারী ভোটারদের ব্যাপক উপস্থিতি দেখা গেছে। আজ সকালে তিতুদহ ইউপির ছোটশলুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে
ছবি: প্রথম আলো

চুয়াডাঙ্গায় ঘন কুয়াশার সঙ্গে হিমেল বাতাস বইছে। তবে তীব্র শীত ভোটারদের ঘরে রাখতে পারেনি। সকাল থেকেই চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার তিতুদহ ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের ভোটকেন্দ্রগুলোতে ভোটারদের ভিড় চোখে পড়েছে।

সপ্তম ধাপের ইউপি নির্বাচনে আজ সোমবার সকাল ৮টা থেকে তিতুদহ ইউপির ১০টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। নির্বাচনকে ঘিরে ভোটকেন্দ্র ও এর আশপাশের এলাকাগুলোতে উৎসবের আমেজ দেখা গেছে।

সকাল থেকে ইউনিয়নের পাঁচটি কেন্দ্র ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি কেন্দ্রেই নারী ও পুরুষ ভোটারদের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি। দীর্ঘ সারিতে দাঁড়িয়ে সারিবদ্ধভাবে ভোটকক্ষে ঢুকে পছন্দের প্রার্থীকে বেছে নিচ্ছেন তাঁরা। ভোটকেন্দ্রের বাইরে মুখরোচক খাবারসহ নানা পণ্যের পসরা সাজিয়েছেন অস্থায়ী দোকানিরা।

বড়শলুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দিতে এসেছেন হাজেরা বেগম (৫০)। তিনি বলেন, এবার নির্বাচনের পরিবেশ খুব ভালো। নির্বিঘ্নে সবাই ভোট দিচ্ছেন।

তরুণ ভোটার বিলকিস খাতুন বলেন, ‘জীবনে প্রথম ভোট দিলাম। কয়েক দিন ধরে যেভাবে গুঞ্জন চলছিল, তাতে নিজের ভোট দিতে পারব কি না, সেটা নিয়ে সন্দেহ ছিল। তবে সব শঙ্কা কাটিয়ে পছন্দের প্রতীকে ভোট দিতে পেরেছি।’

সবশেষ ২০১১ সালের ৫ জুন তিতুদহ ইউপিতে নির্বাচন হয়েছিল। ওয়ার্ড সীমানা নিয়ে আদালতে মামলার কারণে দীর্ঘদিন এ ইউপিতে ভোট গ্রহণ বন্ধ ছিল। দীর্ঘ ১১ বছর পর এ ইউপিতে ভোট হওয়ায় মানুষের মধ্যে বাড়তি উৎসাহ রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় ভোটাররা।

নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৪ জন, সংরক্ষিত নারী সদস্যের ৩টি পদে ১০ জন এবং সাধারণ সদস্যের ৯টি পদে ৪১ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

ইতিমধ্যেই চেয়ারম্যান প্রার্থীরা বিভিন্ন কেন্দ্রে ভোট দিয়েছেন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শুকুর আলী ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মিজানুর রহমান হুলিয়ামারী হাফেজিয়া মাদ্রাসা কেন্দ্রে ভোট দিয়েছেন। এ ছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী ফারুখ হোসেন বড়শলুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মনোনীত প্রার্থী মো. আবদুর রাজ্জাক বলদিয়া সিদ্দিকিয়া নূরানী হাফেজিয়া মাদ্রাসা কেন্দ্রে ভোট দিয়েছেন।

ভোট দেওয়ার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় শুকুর আলী বলেন, সকাল থেকে প্রতিটি কেন্দ্রে ভোটারদের ব্যাপক উপস্থিতি দেখে ভালো লাগছে। সবাই শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পছন্দের প্রতীকে ভোট দিচ্ছেন। নিজের জয়ের ব্যাপারে তিনি শতভাগ আশাবাদী।

এদিকে সকাল পর্যন্ত নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মিজানুর রহমানও সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা তারেক আহমেদ বলেন, প্রতিটি কেন্দ্রে ভোটারদের সরব উপস্থিতি রয়েছে। নির্ধারিত সময় পর্যন্ত ভোটকেন্দ্রগুলোতে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার জন্য প্রার্থী, ভোটার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।