কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার শুহিলপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ইমাম হোসেন সরকারের ওপর হামলার প্রতিবাদে উপজেলা মাসিক আইনশৃঙ্খলা কমিটি ও উন্নয়ন সমন্বয় সভা বয়কট করেছেন ১৩ জনপ্রতিনিধি। তাঁদের মধ্যে ১২ জন ইউপি চেয়ারম্যান ও ১ জন পৌরসভার মেয়র।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় চান্দিনা উপজেলা মিলনায়তনে আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভা শুরু হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন কুমিল্লা-৭ (চান্দিনা) আসনের সাংসদ প্রাণ গোপাল দত্ত। সভায় ১৩টি ইউনিয়নের মধ্যে ১২টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অনুপস্থিত ছিলেন। পাশাপাশি চান্দিনা পৌরসভার মেয়র শওকত হোসেন ভূঁইয়াও উপস্থিত ছিলেন না। পরে একই স্থানে মাসিক সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় অনুপস্থিত দুজন চেয়ারম্যান নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, যেখানে চেয়ারম্যানের নিরাপত্তা নেই। সেখানে সভায় গিয়ে কী হবে? তাই তাঁরা যাননি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৩০ অক্টোবর চান্দিনা থানায় কমিউনিটি পুলিশিং ডে উপলক্ষে এক শোভাযাত্রা করে পুলিশ। এতে শুহিলপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. ইমাম হোসেন সরকার অংশ নেন। হঠাৎ করে থানার ফটকের সামনে বরকইট ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. শাহজাহান কয়েকজন সঙ্গী নিয়ে ওই চেয়ারম্যানের ওপর হামলা চালান। এই সময় তিনি চান্দিনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আরিফুর রহমানের কক্ষে অবস্থান নেন। সেখানেও তাঁর ওপর হামলা ও মারধরের ঘটনা ঘটে। চেয়ারম্যানের ওপর হামলার আগে তাঁর গাড়িচালককেও মারধর করা হয়।
শুহিলপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ইমাম হোসেন সরকার বলেন, ‘আমি থানার গেটে গিয়ে পৌঁছালে শাহজাহানসহ সন্ত্রাসীরা আমার ওপর হামলা করে। আমার গাড়ির চালককে মারধর করে গাড়িতে থাকা ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা লুটে নেয়। আমি থানায় ওসি সাহেবের কক্ষে গিয়েও নিরাপত্তা পাইনি।’
চান্দিনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আরিফুর রহমান বলেন, ‘চেয়ারম্যানের ওপর কোনো হামলা হয়নি। তাঁর ড্রাইভারের সঙ্গে থানার বাইরে কে বা কারা ঝামেলা করেছেন। সেদিন আমার কক্ষেই তিনি আশ্রয় নিয়েছিলেন।’
এ ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভাপতি ও চান্দিনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশরাফুন নাহার বলেন, ‘আজকের মিটিংয়ে সব চেয়ারম্যানকে নোটিশ করা হয়েছে। ফোন করা হয়েছে। এতে ১২ জন চেয়ারম্যান আসেননি। কী কারণে আসেননি, আমি জানি না। তবে লোকমুখে জানতে পেরেছি, থানায় এক চেয়ারম্যানের সঙ্গে ঝামেলা হয়েছে। আমাকে কেউ জানাননি। লিখিত কোনো অভিযোগও পাইনি।’
উপজেলা সমন্বয় কমিটির সভাপতি ও চান্দিনা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান তপন বক্সী বলেন, ‘আমি কয়েকজন চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলেছি। তাঁরা আমাকে বলেছেন, আপনারা চেয়ারম্যানদের নিরাপত্তা দিতে পারেন না। আপনাদের মিটিংয়ে কীভাবে যাব?’