ছাত্রদলের সভাপতি প্রার্থীকে ছাত্রলীগের সভাপতি করে কমিটি ঘোষণা
ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিজয়নগর উপজেলায় ছাত্রদলের সভাপতি প্রার্থীকে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি ও বিবাহিত ছাত্রনেতাকে সাধারণ সম্পাদক করে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে।
গত শনিবার রাতে উপজেলা ছাত্রলীগ উপজেলার চরইসলামপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের ১৫ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করে। সেই কমিটি নিয়ে উপজেলাজুড়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা।
উপজেলা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এমদাদ সাগর ও সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে চরইসলামপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের ১৫ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটিতে একসময় ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি প্রার্থী মনির হোসেনকে চরইসলামপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি ও বিবাহিত ছাত্রনেতা সেলিম মিয়াকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে।
স্থানীয় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা জানিয়েছেন, ছাত্রলীগের কমিটিতে সভাপতির পদ পাওয়া মনির হোসেন ২০০৯ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত উপজেলার চরইসলামপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি প্রার্থী ছিলেন। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত পদ না পেয়ে মনির ছাত্রদলের রাজনীতি থেকে দূরে সরে দাঁড়ান। একপর্যায়ে আস্তে আস্তে মনির ইউনিয়ন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মেশা শুরু করেন এবং ছাত্রলীগের দলীয় বিভিন্ন কর্মসূচিতে যোগ দেওয়া শুরু করেন। গত শনিবার কোনো ধরনের সম্মেলন ছাড়াই উপজেলা ছাত্রলীগ মনিরকে সভাপতি ও বিবাহিত সেলিমকে সাধারণ সম্পাদক করে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করে। কিন্তু ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, বিবাহিত কেউ ছাত্রলীগের কোনো পদ-পদবিতে থাকতে পারেন না।
চরইসলামপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মিয়া চান প্রথম আলোকে বলেন, বছরখানেক আগে উপজেলার মনিপুর এলাকায় সেলিম মিয়া বিয়ে করেছেন। বিয়েতে দাওয়াত পেলও ব্যক্তিগত ব্যস্ততার কারণে তিনি যেতে পারেননি। সেলিম ছাত্রলীগের পদ পেয়েছেন কি না, তিনি জানেন না। তবে মনির ছাত্রদলের সভাপতি প্রার্থী ছিলেন।
চরইসলামপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি সাব্বির আহমেদ বলেন, ‘২০০৯ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত ইউনিয়ন ছাত্রদলের কমিটি গঠনের জন্য আমরা অনেক দৌড়ঝাঁপ করেছি। সে সময় মনির আমার সঙ্গে সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ছিল। ২০১১-১২ সালের দিকে আমাকে সভাপতি করে কমিটি ঘোষণা করা হয়। সে সময় মনিরকে চেষ্টা করেও কমিটিতে কোনো পদে রাখতে পারিনি। এরপর মনির দলের কর্মসূচিতে যোগদান করা বন্ধ করে দেয়। অনেক ডেকেছি, কিন্তু মনির সাড়া দেয়নি এবং আর দলে আসেনি।’
এ বিষয়ে জানার জন্য একাধিকবার চেষ্টা করেও মনির হোসেন ও সেলিম মিয়ার সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
উপজেলা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এমদাদ সাগর বলেন, ‘উপজেলার একজন ঊর্ধ্বতন নেতা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম দিয়েছেন। সভাপতি ছাত্রদলের সভাপতি প্রার্থী ছিলেন এবং সাধারণ সম্পাদক বিবাহিত, এসব তথ্য আমাদের জানা নেই। আমরা খোঁজ নিয়ে সত্যতা পেলে জেলার সঙ্গে আলোচনা করে তাঁদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেব।’
জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, বিষয়গুলো যাচাইয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। যাচাই-বাছাইয়ে অভিযোগের সত্যতা পেলে কমিটি স্থগিত করা হবে এবং অবশ্যই তাঁদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কারণ, ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, বিবাহিত কেউ ছাত্রলীগের কোনো পদ-পদবিতে থাকতে পারবেন না।