ছেলের হত্যাকারীদের শাস্তি চেয়ে মানববন্ধনে কাঁদলেন মা–বাবা

সিলেটের টিলাগড়ে কলেজছাত্র অভিষেক দে হত্যাকারীদের বিচার দাবিতে মানববন্ধন। আজ রোববার দুপুর ১২টায় সিলেট-তামাবিল আঞ্চলিক মহাসড়কের শিবগঞ্জ সাদিপুর এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

সিলেটের শিবগঞ্জ এলাকার কলেজছাত্র অভিষেক দে (১৮) হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী। আজ রোববার দুপুর ১২টায় সিলেট-তামাবিল আঞ্চলিক মহাসড়কের শিবগঞ্জ সাদিপুর এলাকায় আয়োজিত মানববন্ধনে অংশ নিয়ে হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানান অভিষেকের মা-বাবা। এ সময় তাঁরা কান্নায় ভেঙে পড়েন।

২০২০ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি রাতে ছাত্রলীগের কর্মীদের হাতে ছুরিকাঘাতে খুন হয়েছিলেন অভিষেক দে। তিনি সিলেটের টিলাগড় ছাত্রলীগের একটি পক্ষের সঙ্গে সক্রিয় ছিলেন। অভিষেক সিলেটের গ্রিন হিল স্টেট কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন।

শিবগঞ্জ সাদিপুর এলাকাবাসীর উদ্যোগে আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন অভিষেক দের বাবা দীপক দে ও তাঁর মা অনিতা দে। কান্নাজড়িত কণ্ঠে অনিতা দে বলেন, একমাত্র ছেলেকে মানুষের মতো মানুষ হিসেবে তৈরি করার স্বপ্ন ছিল। কিন্তু প্রকাশ্যে তাঁর জীবন কেড়ে নিয়ে গেল সন্ত্রাসীরা। তিনি প্রশ্ন করেন, ছেলে কী দোষ করে ছিল যে তাঁকে হত্যা করতে হবে? কেন তাঁকে অল্প বয়সেই পৃথিবী ছেড়ে যেতে হলো? তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে ছেলে হত্যাকারীদের দ্রুত বিচার দাবি করেন।

মানববন্ধনে বক্তব্য দেন নিহত অভিষেক দের স্বজন অঞ্জনা দে, স্থানীয় বাসিন্দা দেলোয়ার হোসেন, রতীন চন্দ কর, রঞ্জিত কর, আজিজুল ইসলাম, দীপন দাস, প্রলয় মজুমদার, নুর মিয়া, কবির হোসেন, আমজাদ হোসাইন, সুলতান আহমদ, রজত কর, আদিত্য দাস, সামন আহমদ প্রমুখ।

সিলেট মহানগর পুলিশের শাহপরান (রহ.) থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ আনিসুর রহমান বলেন, এক বছর আগে হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন।

অভিষেক দের বাবা দীপক দে প্রথম আলোকে বলেন, হত্যা মামলায় ৯ আসামির মধ্যে বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন দুজন। চার আসামি উচ্চ আদালতের জামিনে মুক্ত হয়েছেন। তিন জন আসামি এখনো পলাতক। তিনি বলেন, মামলায় অভিযুক্তরা বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি দিয়ে যাচ্ছেন। তাঁরা ছেলে হত্যার বিচার দাবিতে বিভিন্ন পোস্টার-ফেস্টুন ছিঁড়ে ফেলছেন। হুমকি-ধমকি দেওয়ায় থানায় সাধারণ ডায়েরিও করেছেন।

দীপক দে বলেন, ‘ছেলে হত্যার বিচার বিলম্ব হচ্ছে। তবে আদালতের প্রতি আমাদের আস্থা রয়েছে। আমি জীবিত থাকা অবস্থায় ছেলে হত্যার বিচার দেখে যেতে চাই। কিন্তু অভিযুক্তরা বিভিন্নভাবে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন।’