জামালপুরে যমুনা নদীর পানি অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। ইতিমধ্যে জেলার পাঁচটি উপজেলার ৩৬টি ইউনিয়ন বন্যাকবলিত হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৮টি ইউনিয়নের প্রায় ৪০ হাজার মানুষ নতুন করে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।
এদিকে আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে যমুনা নদীর বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে ৪ সেন্টিমিটার পানি বেড়ে বিপৎসীমার ৬৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, ইসলামপুর, দেওয়ানগঞ্জ, মেলান্দহ, মাদারগঞ্জ ও সরিষাবাড়ী উপজেলার প্রায় আট হাজার হেক্টর ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, করোনার প্রাদুর্ভাবের পর থেকে এসব অঞ্চলের অধিকাংশ মানুষের আয়-রোজগার কমে গিয়েছিল। অনেকেই কাজ হারিয়ে বেকার হয়ে পড়েছেন। এর মধ্যে বন্যা যোগ হওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছে এসব অঞ্চলের মানুষ। অনেকের ঘরে খাবারের সংকট দেখা দিয়েছে। কেউ কেউ খাবারের অভাবে চিড়া-মুড়ি খেয়েও থাকছেন বলে জানা গেছে। ইতিমধ্যে বন্যাকবলিত এলাকার লোকজন আশ্রয়কেন্দ্র, সেতু ও উঁচু স্থানে যেতে শুরু করেছে।
এ প্রসঙ্গে চিনাডুলী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবদুস সালাম প্রথম আলোকে জানান, এই ইউনিয়নের প্রায় ১৫ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। বেশির ভাগ মানুষের ঘরেই তেমন কোনো খাবার নেই। সরকারি চাল বরাদ্দ পেলেও তা অল্প কিছু মানুষের মধ্যে বিতরণ করতেই শেষ হয়ে গেছে।
আবদুস সালাম বলেন, খালি চাল দিয়ে তো আর খাওয়া যায় না। তার সঙ্গে অন্য উপকরণও লাগে। মানুষের এখন চরম দুর্ভোগ চলছে। সরকারিভাবে পর্যাপ্ত ত্রাণসামগ্রীর প্রয়োজন এখন।
তবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) পানি পরিমাপের নিয়ন্ত্রক আবদুল মান্নান বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীর পানি ৪ সেন্টিমিটার বেড়েছে। বর্তমানে পানি বিপৎসীমার ৬৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বাড়লেও ভয়াবহ বন্যার আশঙ্কা কম। পানি বর্তমানে কিছুটা স্থির রয়েছে। বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
জামালপুর জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. নায়েব আলী প্রথম আলোকে বলেন, বন্যার্তদের জন্য এরই মধ্যে সারা জেলায় ১১২ মেট্রিক টন চাল, ৩৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা ও ১ হাজার শুকনা খাবারের প্যাকেট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এই ত্রাণসামগ্রী বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়ে গেছে।