বরিশালের হিজলা উপজেলা সদরে একটি দোকানে জুতা কিনতে গিয়ে তর্কের জের ধরে হামলা ও ভাঙচুর চালিয়ে দুই লাখ টাকা লুট করে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে রিপন ব্যাপারী নামের স্থানীয় এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। এ সময় তারেক হোসেন (৩৫) নামের ওই ব্যবসায়ীকে মারধর করা হয়। আহত অবস্থায় তাঁকে হিজলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে হিজলা বন্দরের খুননা বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত রিপন ব্যাপারী উপজেলার আন্ধারমানিক ইউনিয়নের সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য শিল্পী বেগমের স্বামী।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে তারেকের দোকানে জুতা কেনার জন্য আসেন রিপন ব্যাপারীর স্ত্রী শিল্পী বেগম। এ সময় একটা স্যান্ডেল দেখতে গিয়ে চাপ দিয়ে ভেঙে ফেলেন তিনি। একপর্যায়ে রিপন এলে দোকানমালিক তারেকের সঙ্গে তাঁর তর্ক হয় এবং রিপনকে দোকান থেকে বের হয়ে যেতে বলেন তারেক। এতে ক্ষিপ্ত হন রিপন। এরপর সন্ধ্যা ৬টার দিকে ১০-১২ জনকে সঙ্গে নিয়ে ওই দোকানে হামলা চালান তিনি। এ সময় দোকানটি ভাঙচুর ও তারেককে ব্যাপক মারধর করা হয়। একপর্যায়ে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা এগিয়ে এলে হামলাকারীরা চলে যান। এরপর তাঁরা তারেককে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ইকরাম হোসেন বলেন, আহত ব্যবসায়ীর নাকে আঘাত লাগায় বেশ রক্তক্ষরণ হয়েছে। তবে তাঁর শারীরিক অবস্থা খুব গুরুতর নয়। চিকিৎসা চলছে।
আহত তারেকের বাবা নূর বকশি অভিযোগ করে বলেন, দোকানে ব্যাপক ভাঙচুরের পর ক্যাশ কাউন্টার থেকে অন্তত ২ লাখ টাকা এবং একটি মুঠোফোন নিয়ে যান হামলাকারীরা।
স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, ঘটনার পর স্থানীয় ব্যবসায়ীরা দোকান বন্ধ করে বিক্ষোভ করে এর বিচার দাবি করেন। পরে ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আমির হোসেন তাঁদের শান্ত করেন। তিনি দোকান খোলার অনুরোধ করলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। তবে আগামীকাল শনিবারের মধ্যে দায়ী ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার না করা হলে আবারও দোকান বন্ধ করে আন্দেলানের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা। বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আমির হোসেন বলেন, ‘আমরা হামলাকারীদের বিচার চাই। প্রশাসন আমাদের আশ্বস্ত করেছে।’
অভিযোগের বিষয়ে কথা হয় রিপন ব্যাপারীর স্ত্রী ইউপি সদস্য শিল্পী বেগমের সঙ্গে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি ছেলের জন্য জুতা কিনতে গেলে একজোড়া জুতার মূল্য ৮০০ টাকা চান ব্যবসায়ী তারেক। এরপর জুতার কোনো গ্যারান্টি আছে কি না, জানতে চাই এবং একটি জুতা ধরে মোচড় দিলে তা ফেটে যায়। এ সময় তারেক আমার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। একপর্যায়ে আমার স্বামী এলে তাঁকেও হুমকি দেন এবং তাঁর পকেটে হাত দেন। দোকানে থাকা আরেকজন আমার স্বামীকে মারধর শুরু করেন এবং আমার হাতের ভ্যানিটি ব্যাগ নিয়ে যান। ব্যাগে ৫০ হাজার টাকা ছিল। এর বাইরে আর কোনো ঘটনা ঘটেনি। আামি থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।’
জানতে চাইলে হিজলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইউনুস মিয়া রাতে বলেন, ‘দুই পক্ষই থানায় পৃথক দুটি অভিযোগ দিয়েছে। আমরা তদন্ত করে এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেব। এখনো কোনো পক্ষের অভিযোগ মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়নি।’