ঝালকাঠিতে এসআই ও কনস্টেবলকে প্রত্যাহার
ঝালকাঠির নলছিটি থানা থেকে জব্দ করা চোরাই রড বিক্রির চেষ্টার অভিযোগে এসআই (উপপরিদর্শক) ও পিকআপ ভ্যানের চালককে (কনস্টবল পদমর্যাদার) প্রত্যাহার করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার বিকেলে জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের এক আদেশে তাঁদের প্রত্যাহার করা হয়।
প্রত্যাহার করা পুলিশ সদস্যরা হলেন এসআই মো. আবু হানিফ ও পিকআপ ভ্যানের চালক মো. শহিদুল ইসলাম। তাঁদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টিও নিশ্চিত করেছেন নলছিটি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাহামুদ হাসান।
নলছিটি থানা–পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত শুক্রবার রাতে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড থানার একটি চুরি মামলার পলাতক আসামিদের ধরতে উপজেলার মালিপুর গ্রামে অভিযান চালায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) একটি দল। রাত ১২টার দিকে মালিপুর দরবারসংলগ্ন তালুকদার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে একেএস (আবুল খায়ের স্টিল) কোম্পানির ৩ হাজার ১৪৫ কেজি চোরাই রড উদ্ধার করে তারা। এ ঘটনায় আমিনুল তালুকদার (৫০) নামের একজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে পিবিআই। পরে বরগুনার তালতলা গ্রামের বেল্লাল হোসেন নামের আরও একজনকে পিবিআই গ্রেপ্তার করে। উদ্ধার করা রডগুলো জব্দ দেখিয়ে নলছিটি থানায় রেখে শনিবার সকালে আটক আমিনুল তালুকদার নিয়ে চট্টগ্রাম চলে যান পিবিআইর সদস্যরা।
ওই দিন রাত ১১টার দিকে রড চুরির ঘটনায় জড়িত অপর ব্যক্তিরা চোরাই রড ওই এলাকার একটি পুকুরের পানিতে ফেলার চেষ্টা করেন। স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে খবর পেয়ে পুলিশ পুকুরের পাড় থেকে একেএস কোম্পানির আরও তিন বান্ডিল (১৫৮ কেজি) কাদামাখা রড উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। পরদিন রোববার বিকেলে ওই রড অর্ধলক্ষাধিক টাকায় দপদপিয়া জিরো পয়েন্ট এলাকার এক ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করেন থানা–পুলিশের সদস্যরা।
রাত নয়টার দিকে বরিশাল-নলছিটি সড়ক দিয়ে ভ্যান গাড়িযোগে রডগুলো দপদপিয়ার দিকে নেওয়া হচ্ছিল। রডগুলোতে কাদা দেখে সারদল ব্র্যাক অফিসের সামনে উপস্থিত জনতার সন্দেহ হয়। তাঁরা ভ্যানচালককে থামিয়ে বিষয়টি জানতে চাইলে সে জানায়, ‘রডগুলো থানা থেকে বিক্রি করা হয়েছে। দুজন পুলিশ সদস্য রডগুলো তার ভ্যানে তুলে দিয়ে দপদপিয়া পৌঁছে দিতে বলেছেন।’
স্থানীয় লোকজন চোরাই রডসহ ভ্যানগাড়িটি আটকে রাখলে থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এইচ এম মাহমুদ ও এসআই আবু হানিফ ঘটনাস্থলে যান। এ সময় রডগুলো জব্দ দেখিয়ে থানায় নেওয়ার নির্দেশ দেন পরিদর্শক (তদন্ত) এইচ এম মাহমুদ। পরে পুলিশ সদস্যদের বাঁচাতে ভ্যানচালককে চোর সাজিয়ে রাতভর থানায় আটকে রেখে পরের দিন ছেড়ে দেওয়া হয়।
এসআই মো. আবু হানিফ বলেন, ‘আমি এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত নই। আমি শুধু পরিদর্শক (তদন্ত) এইচ এম মাহমুদের নির্দেশ পালন করে রডগুলো বিক্রির জন্য ভ্যানগাড়িতে উঠিয়ে দিয়েছি। ষড়যন্ত্র করে আমাকে ফাঁসানো হয়েছে।’
পরিদর্শক মাহমুদ বলেন, জব্দ করা চোরাই রড বিক্রির চেষ্টার অভিযোগে এসআই মো. আবু হানিফ ও পিকআপ ভ্যানের চালক শহিদুলকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।