রাজবাড়ী শহরের গোদার বাজার এলাকায় পদ্মা নদীতে আবার ভাঙন শুরু হয়েছে। এতে শহর রক্ষা বাঁধের সুরক্ষার জন্য ব্লক দিয়ে স্থায়ীভাবে পদ্মা নদীর তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের ব্লক ধসে গেছে। গতকাল শনিবার সকাল থেকে ভাঙন শুরু হয়। ভাঙনরোধে বালুর বস্তা ফেলা হচ্ছে। ভাঙনের ঝুঁকিতে পড়েছে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ শহর রক্ষা বেড়িবাঁধ।
গতকাল দুপুরে দেখা যায়, চরধুঞ্চি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে একটি পাকা মসজিদ ও কয়েকটি বাড়ি। বিদ্যালয় থেকে প্রায় ১০ মিটার দূরে নতুন করে ভাঙন দেখা দিয়েছে। প্রায় ৩০ মিটার এলাকায় তীর সংরক্ষণ কাজের ব্লক ধসে গেছে। ভাঙন এলাকায় কয়েকটি বাড়ির লোকজন আতঙ্কে সময় পার করছেন। তাঁরা বাড়ির আসবাব নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিচ্ছেন। ভাঙনরোধে বালুর বস্তা ফেলা হচ্ছে। শ্রমিকেরা বস্তায় বালু ভরে নদীতে ফেলছেন। পাউবোর কর্মকর্তারা কাজ তদারক করছেন। তবে সম্প্রতি শুরু হওয়া ইটভাটার পাশে চারটি পয়েন্টে ভাঙন আপাতত বন্ধ রয়েছে। সেখানে বালুর বস্তা ও টিউব ফেলা হয়েছে। নদীর পাড়ে আরও ব্যাগ প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে।
চরধুঞ্চি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দোলেনা সুলতানা বলেন, ‘বিদ্যালয়টি এখন ঝুঁকির মধ্যে। কখন কী হয়, তা বলা যাচ্ছে না। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। বিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র ও মালামাল নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিচ্ছি। আপাতত চেয়ার ও বেঞ্চ বিদ্যালয়েই থাকবে। পরিস্থিতি বিবেচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, ব্লকের নিচে ৩০ মিটার সুরক্ষাপ্রাচীর দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা দেওয়া হয়নি। স্থানীয়ভাবে একাধিকবার বলা হয়েছে। কাজে বাধা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। সুরক্ষাপ্রাচীর না থাকায় স্রোতে ব্লকের নিচের বালু সরে যাচ্ছে। এতে ব্লক ধসে যাচ্ছে। যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করে কাজ করা হলে এই ভাঙন দেখতে হতো না। সবাইকে আতঙ্কে থাকতে হতো না। শহর রক্ষা বেড়িবাঁধ ঝুঁকির মধ্যে থাকত না।
পাউবো নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবদুল আহাদ বলেন, ‘ভাঙনকবলিত স্থানে বালুর বস্তা ও টিউব ফেলা হচ্ছে। নকশা ৫–৬ বছর আগের করা। গোদার বাজারের পুরো এলাকাই ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এর মধ্যে নদীর ভৌগোলিক অবস্থান পরিবর্তিত হয়েছে। নদীর গভীরতা বেড়ে গেছে। আমরা নিয়ম মেনে কাজ করেছি। এই নকশায় এখানে ভাঙন ঠেকানো যাবে না। এখানে নকশা পরিবর্তন করতে হবে।’