টাঙ্গাইলে করোনায় মৃত্যুর প্রায় অর্ধেকই মারা গেছে জুলাইয়ে
টাঙ্গাইলে করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর থেকে জুলাই মাস ছিল ভয়াবহ। মোট মৃত্যুর প্রায় অর্ধেক মারা গেছে জুলাই মাসে। এ ছাড়া মোট আক্রান্তের প্রায় ৪৪ শতাংশ সংক্রমিত হয়েছে এই মাসেই।
স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, জুলাই মাসের শুরু থেকেই সংক্রমণের হার ছিল অনেক বেশি। জেলায় প্রথম করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয় গত বছরের ৮ এপ্রিল। এরপর গত ৩০ জুন পর্যন্ত জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৭ হাজার ৭০৭। ৩১ জুলাই পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ায় ১৩ হাজার ৭৩৭। অর্থাৎ জুলাই মাসে ৬ হাজার ৩০ জন করোনায় আক্রান্ত হন, যা মোট আক্রান্তের ৪৩ দশমিক ৯০ শতাংশ।
এই জুলাই মাসে জেলায় মৃত্যুরও রেকর্ড হয়েছে। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে জেলার প্রথম মৃত্যু হয় গত বছরের ২০ এপ্রিল। গত ৩০ জুন পর্যন্ত জেলায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়ায় ১০৮। জুলাই মাসে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা বাড়তে থাকে। এই মাসে ১০৫ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। জেলায় এখন মোট মৃতের সংখ্যা ২১৩। মোট মৃত্যুর ৪৯ দশমিক ২৯ শতাংশের মৃত্যু হয়েছে জুলাই মাসে। এ ছাড়া করোনার উপসর্গ নিয়ে শুধু টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালেই ৬১ জনের মৃত্যু হয়েছে।
জেলায় বর্তমানে (১ আগস্ট) করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ১৩ হাজার ৯২৬। আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থ হয়েছে ৭ হাজার ৬৬০ জন। টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ১০৫ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বাড়িতে আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৫ হাজার ৯৫৮ জন।
জুন মাসে জেলায় সংক্রমণ বাড়তে শুরু করার পর ২৩ জুন থেকে টাঙ্গাইল পৌর এলাকা ও কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গা পৌর এলাকায় কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। এরপর জুলাই মাসে সারা দেশে শুরু হয় কঠোর বিধিনিষেধ। কিন্তু বিধিনিষেধ চললেও এই সময়ে করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যু বেশি হয়েছে।
টাঙ্গাইলের সিভিল সার্জন আবুল ফজল মো. সাহাবুদ্দিন খান জানান, মাস্ক ব্যবহার না করা এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চলার কারণে সংক্রমণ বেড়েছে। সংক্রমণ প্রতিরোধে মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কোনো বিকল্প নেই।
টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) শফিকুল ইসলাম জানান, করোনা উপসর্গ নিয়ে অনেকেই বাড়িতে বসেছিলেন। শেষ মুহূর্তে হাসপাতালে এসেছেন চিকিৎসা নিতে। তাই জুলাই মাসে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে। করোনার উপসর্গ দেখা দিলেই পরীক্ষা করানো উচিত।