তিনটি অ্যাম্বুলেন্স বিকল, মেরামতের উদ্যোগ নেই

একটি অ্যাম্বুলেন্স দিয়ে কোনোরকমে সেবা দেওয়া হচ্ছে। সেটাও মাসে দুই-তিনবার নষ্ট হয়ে যায়।

প্রতীকী ছবি

জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তিনটি অ্যাম্বুলেন্স দীর্ঘদিন ধরে বিকল পড়ে আছে। একটি অ্যাম্বুলেন্স দিয়ে কোনোরকমে সেবা দেওয়া হচ্ছে। সেটাও মাসে দুই-তিনবার নষ্ট হয়ে যায়। এ অবস্থায় করোনা রোগীদের মুমূর্ষু অবস্থায় জেলা শহর কিংবা ময়মনসিংহে পাঠানো সম্ভব হয় না।

গত রোববার সকালে সরেজমিন দেখা যায়, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনের মাঠের শেড ঘরের নিচে তিনটি অ্যাম্বুলেন্স রাখা হয়েছে। এর মধ্যে দুটির চাকাসহ বিভিন্ন যন্ত্রাংশ একেবারে নষ্ট হয়ে গেছে। দীর্ঘদিন ধরে অ্যাম্বুলেন্সগুলো পড়ে থাকায় পুরো জরাজীর্ণ হয়ে গেছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ১৯৯৫ সালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একটি অ্যাম্বুলেন্স দেয়। ১০ বছর চলার পর ২০০৬ সালে অ্যাম্বুলেন্সটি বিকল হয়ে যায়। পরে ওই বছর নতুন একটি অ্যাম্বুলেন্স দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ২০১৫ সালে প্রধানমন্ত্রী আরেকটি অ্যাম্বুলেন্স উপহার দেন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। সবশেষ ২০১৮ সালে আরেকটি নতুন অ্যাম্বুলেন্স দেওয়া হয়। এখন এই অ্যাম্বুলেন্সটি চলছে।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কয়েকজন নার্স ও ওয়ার্ডবয় বলেন, একটি অ্যাম্বুলেন্স দিয়ে রোগীদের সেবা দেওয়া হচ্ছে। সেটাও মাসে কয়েকবার নষ্ট থাকে। তখন রোগীদের ভাড়া করা অ্যাম্বুলেন্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সবচেয়ে বড় সমস্যা পড়েন করোনা রোগীদের স্বজনেরা। করোনার রোগীদের সাধারণ যানবাহন নিতে চান না। তাঁদের কয়েক গুণ বেশি ভাড়া দিয়ে জেলা শহর কিংবা ময়মনসিংহে নেওয়া হয়। হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্সচালক আছেন একজন। দুটো অ্যাম্বুলেন্স সচল থাকলে সব সময় সেবা দেওয়া যাবে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক রোগীর স্বজন বলেন, যেকোনো রোগীর বেশি খারাপ অবস্থা দেখলে তাঁকে সঙ্গে সঙ্গে জেলা শহরের হাসপাতালে স্থানান্তর করতে বলা হয়। তবে অ্যাম্বুলেন্স পাওয়া যায় না। বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্সে এক হাজার টাকা ভাড়া লাগে। অনেক স্বজন সিএনজিচালিত অটোরিকশা বা ইজিবাইকে করে রোগীদের নিয়ে যান। অথচ তিনটি অ্যাম্বুলেন্স পড়ে পড়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্সচালক মো. আবদুল রহিম বলেন, বর্তমানে যে অ্যাম্বুলেন্সটি চলছে, সেটাও মাসে দুই থেকে তিনবার বিকল হয়ে যায়। অনেক সময় ইঞ্জিনের কাজ করতে হয়। তখন সারাতে আরও বেশি সময় লাগে।

মেলান্দহ স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. ফজলুল হক বলেন, তিনটি অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যে দুটি আর মেরামত করার মতো অবস্থায় নেই। তবে একটি মেরামত করা সম্ভব। এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একজন চালকের পদ রয়েছে। দুটি গাড়ি

থাকলেও, চালক নেই। বিকল অ্যাম্বুলেন্সের বিষয়ে প্রত্যেক মাসে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হয়।