তিন দিনের ছুটির আগে নগরে ভিড়-যানজট

করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সরকারের জারি করা কঠোর বিধিনিষেধ শেষ হয়েছে। নগরের সড়কে আজ বৃহস্পতিবার সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে গতকাল বুধবারের চেয়ে বেশি যানবাহন নেমেছে। তাই বিভিন্ন সড়কে যানজট সৃষ্টি হয়েছে। আজ দুপুর সাড়ে ১২টায় নগরের আন্দরকিল্লা এলাকায়
ছবি: জুয়েল শীল

চট্টগ্রাম নগরীর অক্সিজেন মোড় এলাকায় বৃহস্পতিবার দুপুরে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। প্রায় তিন কিলোমিটার দীর্ঘ এ জটে বসে থাকতে হয় যাত্রীদের। বেশির ভাগ গাড়ি ছিল যাত্রীভর্তি। এর মধ্যে গরমের কারণে ভোগান্তিও বাড়ে। আবার মোড়েও শত শত মানুষ ছিল গাড়ির অপেক্ষায়।

সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে শুধু অক্সিজেন মোড় নয়, নগরের বেশির ভাগ এলাকায় ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়েছে। কঠোর বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার দ্বিতীয় দিন ছিল আজ। আবার আগামীকাল শুক্রবার থেকে শুরু হচ্ছে টানা তিন দিনের ছুটি। ফলে নগরে গাড়ি চলাচলের চাপ বেড়ে গেছে।

নগরের অক্সিজেন মোড় থেকে শুরু হওয়া গাড়ির জট পৌঁছে যায় বালুচরা এলাকায়। চট্টগ্রাম-রাঙামাটি সড়কের এক পাশে গাড়ি চলাচল প্রায় স্থবির হয়ে ছিল দীর্ঘক্ষণ। অনেকক্ষণ অপেক্ষার পর অনেক যাত্রীকে গাড়ি থেকে নেমে হেঁটে রওনা দিতে দেখা যায়। অক্সিজেন মোড় পার হয়ে বায়েজিদ বোস্তামী সড়ক ও অক্সিজেন-মুরাদপুর সড়কের বিভিন্ন অংশে গাড়ির জট ছিল।

নগরের ২ নম্বর গেট, মুরাদপুর, জিইসি মোড়, আগ্রাবাদ এলাকায়ও যানজট সৃষ্টি হয়। আজ জরুরি প্রয়োজনে চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলা থেকে নগরের আগ্রাবাদে এসেছিলেন রুবেল দাশ। কিন্তু বিভিন্ন মোড়ে যানজটে পড়তে হয় তাঁকে। রুবেল প্রথম আলোকে বলেন, কঠোর বিধিনিষেধের সময় এক ঘণ্টার মধ্যে চলে আসা গেলেও আজ আড়াই ঘণ্টা লেগেছে তাঁর। প্রথম অক্সিজেনে যানজটে পড়তে হয়েছে। এরপর ২ নম্বর গেট, জিইসি মোড়েও যানজটে আটকে ছিলেন। আর হঠাৎ গরমও বেড়ে গেছে।

এ দিকে কঠোর বিধিনিষেধের পর নগরের অভিজাত বিপণিবিতানগুলো খুলেছে। গতকালের তুলনায় আজ ক্রেতাদের ভিড় বেড়েছে এসব বিপণিবিতানে। সাপ্তাহিক ছুটির আগে কেনাকাটা করতে এসেছেন অনেকেই। কেউ কেউ এসেছিলেন পরিবারের সদস্যদের নিয়ে।

নগরের আফমি প্লাজায় কেনাকাটা করতে এসেছিলেন আফতাব আহমেদ নামের এক ক্রেতা। তিনি বলেন, কঠোর বিধিনিষেধের কারণে দোকানপাট বন্ধ থাকায় কেনাকাটা করা সম্ভব হয়নি। এখন জুতা ও পোশাক প্রয়োজন। তাই কিনতে এসেছেন।

ওই বিপণিবিতানের দুই দোকানি জানান, আপাতত দোকান পরিষ্কারের কাজ করছেন। এর মধ্যে কিছু ক্রেতা আসছেন। টুকটাক বিক্রি হচ্ছে। তবে স্বাভাবিক কেনাকাটা শুরু হতে আরও কিছুদিন লাগবে।

সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে প্রয়োজনীয় টাকা ও বিল পরিশোধের জন্য ব্যাংকে গ্রাহকদের দীর্ঘ সারি দেখা যায়। চট্টগ্রাম নগরের জামালখানে অগ্রণী ব্যাংকের সামনে গ্রাহকদের লম্বা সারি ছিল। তাঁদের কেউ এসেছিলেন টাকা উত্তোলন করতে, কেউ টাকা জমা দিতে। আবার কেউ কেউ এসেছেন গ্যাস, বিদ্যুৎসহ বিভিন্ন বিলের টাকা পরিশোধের জন্য।

আজ সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত নগর ঘুরে দেখা গেছে, কঠোর বিধিনিষেধের পর অনেকটাই স্বাভাবিক চেহারায় ফিরেছে নগর। আগের মতোই খোলা হয়েছে দোকানপাট, বিপণিবিতান। চলছে সব ধরনের পরিবহন। বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি অফিসেও মানুষের উপস্থিতি বেড়েছে।