দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে তিন দিন ধরে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রয়েছে। এতে স্থানীয় বাজারে পেঁয়াজের দাম বাড়তে শুরু করেছে। শিগগিরই আমদানি কার্যক্রম শুরু না হলে পেঁয়াজের বাজার আরও ঊর্ধ্বমুখী হবে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।
আমদানিকারকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভারত থেকে পণ্য আমদানি করতে আমদানিকারকদের আমদানি অনুমতি (আইপি) লাগে। আগের আইপির মেয়াদ শেষ হয়েছে। নতুন করে আইপি না পাওয়ায় আমদানিকারকেরা এলসি করতে পারছেন না। তবে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ থাকলেও অন্যান্য পণ্য আমদানি করা হচ্ছে।
আজ মঙ্গলবার হিলি বাজারের কয়েকজন ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঈদের আগে হিলি স্থলবন্দর আড়তে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ১৪ থেকে ১৬ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। আজ হিলি বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২০-২২ টাকা দরে।
হিলি বাজারের খুচরা পেঁয়াজ বিক্রেতা সাকিল আহম্মেদ বলেন, ‘ঈদের আগে গুদাম থেকে ১৪-১৬ টাকা দরে পেঁয়াজ কিনছি। তারপর প্রতি কেজি ২০ টাকায় খুচরা বিক্রি করছি। আর এখন গুদাম থেকেই ওই পেঁয়াজ ২০-২২ টাকায় কিনতে হচ্ছে।’
এদিকে আজ দিনাজপুর শহরের বাহাদুর বাজারে প্রতি কেজি ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ২৫ টাকা দরে। দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৩২-৩৫ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। বাহাদুর বাজারের খুচরা পেঁয়াজ বিক্রেতা সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘ঈদের আগে ইন্ডিয়ান পেঁয়াজ ১৮ টাকা কেজি বিক্রি করেছি। আর দেশি পেঁয়াজ ২৮-৩০ টাকা কেজি দরে। মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজিতে পাঁচ থেকে সাত টাকা বেড়েছে। তবে ঈদের পর থেকে দু–একটা দোকান ছাড়া ভারতীয় পেঁয়াজের সরবরাহ নেই।’
হিলি স্থলবন্দর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এই বন্দর দিয়ে সর্বশেষ গত ৩০ এপ্রিল ৬৮টি ট্রাকে ১ হাজার ৯০২ মেট্রিক টন ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। এরপর শুরু হয় ঈদের ছুটি। ছুটি শেষে গত শনিবার আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তবে নতুন করে পেঁয়াজ আমদানি হয়নি।
হিলি স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হারুন উর রশিদ বলেন, পেঁয়াজ আমদানির ক্ষেত্রে যেসব ইমপোর্ট পারমিট নেওয়া ছিল, ৫ মে পর্যন্ত সেগুলোর মেয়াদ ছিল। এদিকে ঈদের ছুটি ছিল ১ থেকে ৬ মে পর্যন্ত। যে কারণে ওই সময়ের মধ্যে বাড়তি পেঁয়াজ আমদানি করা সম্ভব হয়নি। ঢাকার খামারবাড়িতে ইমপোর্ট পারমিটের জন্য আবেদন করা হয়েছে। সেখান থেকে জানানো হয়েছে, কৃষি ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে কোনো প্রকার নির্দেশনা না থাকায় ইমপোর্ট পারমিট ইস্যু করা হয়নি। দ্রুত আইপি ছাড়ের জন্য আমদানিকারকেরা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছেন।
হিলি স্থলবন্দর উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ কেন্দ্রের উপসহকারী কর্মকর্তা ইউসুফ আলী বলেন, গত ২৯ মার্চ পেঁয়াজ আমদানির ইমপোর্ট পারমিটের মেয়াদ শেষ হয়। ওই সময় রমজানে দেশে পেঁয়াজের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে মেয়াদ বাড়িয়ে ৫ মে পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছিল। বর্তমানে নতুন ইমপোর্ট পারমিট না থাকায় পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রয়েছে। কবে নাগাদ পারমিট পাওয়া যাবে, সে বিষয়ে কিছু জানাতে পারেননি তিনি।
হিলি স্থলবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন প্রতাপ মল্লিক বলেন, সর্বশেষ ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। ঈদের পর শনিবার থেকে বন্দরের কার্যক্রম চালু হয়েছে। পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ থাকলেও অন্যান্য পণ্য আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম সচল রয়েছে।