পটুয়াখালীর বাউফলে ওয়াক্ফ এস্টেটের জমি দখল করে এক যুবলীগ নেতা আগেই নির্মাণ করেছিলেন বিপণিবিতান। এর পেছনের অংশে নির্মাণ করেন কয়লার ভাটা। এবার তিনি ওই কয়লার ভাটা ভেঙে পাকা ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করেছেন।
উপজেলার কালাইয়া বন্দরের দক্ষিণ প্রান্তে টেম্পোস্ট্যান্ড এলাকায় আবদুল হক পঞ্চায়েত ওয়াক্ফ এস্টেটের (এস্টেট ইসি নম্বর-২১৭৯) জমি দখল করে ওই স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে। কালাইয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মিজান মোল্লা এসব কার্যক্রম চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ওয়াক্ফ এস্টেটের নামে যিনি জমি নিবন্ধন করে দিয়েছেন, সেই আবদুল হকের নাতি মোহসেন মিয়া (৪৮) অভিযোগ করেন, ছয়-সাত বছর আগে সেখানে জমি দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছিল। ২০১৪ সালে তিনিসহ আরও দুই ওয়ারিশ ইউএনওসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
স্থানীয় লোকজন ও ওয়াক্ফ এস্টেটের সুবিধাভোগী পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, প্রায় সাত বছর আগে ওয়াক্ফ এস্টেটের ১ একর ৫৭ শতাংশ জমি মিজান মোল্লা দখল করে তাঁর ইচ্ছেমতো ব্যবহার করছেন। দীর্ঘদিন কয়লার ব্যবসা করে পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি করেছেন। এখন আবার পাকা ভবন নির্মাণ করছেন। দখল করা জমির মূল্য প্রায় ৭ কোটি ৮৫ লাখ টাকা।
গত বৃহস্পতিবার সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, কয়েকজন শ্রমিক পাকা ভবনের নির্মাণকাজ করছেন। শ্রমিকেরা জানান, কয়লার ভাটা ভাঙার পর মিজান মোল্লা পাকা ভবনের কাজ করাচ্ছেন। ওয়াক্ফ এস্টেটের ১ একর ৫৭ শতাংশ জমির সম্মুখভাগে রয়েছে বিপণিবিতান। ওই বিপণিবিতানে ৩০ থেকে ৩৫টি দোকান রয়েছে। দোকানিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতিটি দোকান থেকে মাসিক ভাড়া বাবদ ১ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা নিচ্ছেন মিজান মোল্লা।
তবে মিজান মোল্লা দাবি করেন, তিনি শাহজাদা মিয়া নামের এক মোতোয়ালির কাছ থেকে কয়েক বছর আগে তিনি ওই জমি ইজারা নিয়েছেন।
বাংলাদেশ ওয়াক্ফ প্রশাসকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, শাহজাদা মিয়া নামের ওই ওয়াক্ফ এস্টেটে কোনোদিন মোতোয়ালি নিযুক্তও ছিলেন না। ১৯৭৬ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত মোতোয়ালি ছিলেন জাহাঙ্গীর হোসেন। পরে যৌথভাবে জাহাঙ্গীর হোসেন ও সোলায়মান মিয়াকে মোতোয়ালি নিযুক্ত করা হয়। তবে অর্থ আত্মসাৎসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে তাঁদের দুজনকে মোতোয়ালি থেকে বাদ দেওয়া হয়। ২০২০ সাল থেকে ইউএনওকে মোতোয়ালি করা হয়।
ইউএনওর অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা দশমিনা উপজেলার ইউএনও আল আমিন বলেন, ‘আমি ওই বিষয়ে অভিযোগ পাইনি। এরপরও কাগজপত্র দেখে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’