দীঘিনালার পাহাড়ি এলাকায় হচ্ছে নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়
খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলায় ভারত সীমান্তবর্তী দুর্গম এলাকা নাড়াইছড়িতে একটি নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দুর্গম এ এলাকায় সরকারি-বেসরকারি ১০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকলেও মাধ্যমিক বিদ্যালয় ছিল না। এ জন্য পঞ্চম শ্রেণির সমাপনী শেষ করার পর শিক্ষার্থীরা পড়াশোনার সুযোগ পেত না।
গতকাল শুক্রবার খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক নাড়াইছড়ি পরিদর্শন করে নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য পাঁচ লাখ টাকার অনুদান ঘোষণা করেন। স্বাধীনতার ৫০ বছর পর এই প্রথম সংসদ সদস্যসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা দুর্গম নাড়াইছড়ি পরিদর্শন করেছেন।
নাড়াইছড়িতে নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন পার্বত্য জেলার সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য বাসন্তি চাকমা, জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস, খাগড়াছড়ি লেডিস ক্লাবের সভানেত্রী দীপান্বিতা বিশ্বাস, দীঘিনালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাহমিদা মুস্তফা, নাড়াইছড়ি বিজিবি ক্যাম্পের অধিনায়ক ক্যাপ্টেন আতা-ই রাব্বি, ৫ নম্বর বাবুছড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সন্তোষ জীবন চাকমা ও নারী গ্রামপ্রধান (কারবারি) জ্যোৎস্না চাকমা প্রমুখ।
নাড়াইছড়ির অনিল জীবন কারবারি পাড়ার বাসিন্দা অনন্তহীন চাকমা প্রথম আলোকে বলেন, ‘নাড়াইছড়ির বিভিন্ন গ্রামে আট শতাধিক পরিবারের বসবাস। এলাকায় ১০টি সরকারি-বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকলেও কোনো নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয় না থাকায় এ এলাকার ছেলেমেয়েরা পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করে ঝরে পড়ত। যাদের একটু সামর্থ্য আছে, তারা হাজার হাজার টাকা খরচ করে বাবুছড়া ও উপজেলা সদরে বাসা ভাড়া করে সন্তানদের পড়াশোনা করান। জেলা প্রশাসক নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়ায় এলাকাবাসী খুব খুশি।’
জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, ‘নাড়াইছড়ি এলাকায় একটি নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য জেলা প্রশাসন পাঁচ লাখ টাকা দেবে, নারীদের আত্মনির্ভরশীল করার জন্য নারী সংসদ সদস্য পাঁচটি সেলাই মেশিন ও লেডিস ক্লাব পাঁচটি সেলাই মেশিন দেবে। এ ছাড়া নাড়াইছড়ি এলাকার শিশুদের খেলাধুলার জন্য উপজেলা প্রশাসন দুটি প্রকল্প নিয়ে মাঠ তৈরি করে দেবে। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি থেকে কয়েকটি সেচযন্ত্র দেওয়া হবে। তা ছাড়া এখানকার বাসিন্দাদের মাছ চাষের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।’
আলোচনা সভা শেষে নাড়াইছড়িবাসীর মধ্যে দশ কেজি করে চাল, সাবান, ওরস্যালাইন, মাস্ক, পানি বিশুদ্ধকরণ বড়ি, ওষুধ ও স্যানিটারি ন্যাপকিন বিতরণ করা হয়।