দুই কিলোমিটার যেতেই লাগছে আধা ঘণ্টা

গাইবান্ধা শহরের প্রধান ও ব্যস্ততম ডিবি রোড। সামান্য বৃষ্টি হলেই সড়কের অবস্থা বেহাল হয়ে যায়। ছবিটি শহরের পুরাতন জেলখানা মোড় থেকে তোলা
প্রথম আলো

গাইবান্ধা ডিবি রোডের দুই কিলোমিটার বেহাল হয়ে পড়েছে। সড়কে কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে পুরোনো বাজার পর্যন্ত যানবাহন চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে। সামান্য বৃষ্টি হলে দুর্ভোগ আরও বেড়ে যায়। দুই কিলোমিটার যেতে লাগছে প্রায় আধা ঘণ্টা।
গাইবান্ধা সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ সূত্র জানায়, জেলা শহরের ব্যস্ততম সড়ক ডিবি রোড। সম্প্রতি ডিবি রোডের পুলিশ সুপার কার্যালয় থেকে পুরোনো বাজার পর্যন্ত আড়াই কিলোমিটার অংশ চার লেনে উন্নীতকরণের প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। সওজের এ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ১১৬ কোটি টাকা। ইতিমধ্যে পুলিশ সুপার কার্যালয় থেকে গাইবান্ধা কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল পর্যন্ত কিছু অংশে চার লেনের কাজ শেষ হয়েছে। কিন্তু বাস টার্মিনাল থেকে পুরোনো বাজার পর্যন্ত চার লেনের নির্মাণকাজ এখনো শুরু হয়নি।
সংস্কারের অভাব ও কার্পেটিং না করায় চলতি বর্ষা মৌসুমে বাস টার্মিনালের সোনালী ব্যাংকের সামনে, পলাশপাড়া মোড়, ফকিরপাড়া মোড়, ফকিরপাড়া মসজিদের সামনে, সাদুল্লাপুর রোড মোড়, আসাদুজ্জামান মার্কেটের সামনে, পৌর পার্কের সামনে, পুরোনো জেলখানা মোড়সহ পুরো দুই কিলোমিটারে অসংখ্য ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। চলাচলকারী যাত্রী সাধারণ ও যানবাহন চালকদের অসহনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

গাইবান্ধা শহরের পূর্বপাড়া এলাকার বাসিন্দা নজরুল ইসলাম বলেন, দুই কিলোমিটার পথ পার হতে পাঁচ মিনিট লাগার কথা। কিন্তু সড়কের দুরবস্থার কারণে ২৫-৩০ মিনিট সময় ব্যয় হচ্ছে। এ ছাড়া গর্তে জমে থাকা পানির ওপর দিয়ে বড় যানবাহন পারাপারের সময় পানি ছিটকে দুই পাশের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে যাচ্ছে। অটোরিকশা ও রিকশার যাত্রী, মোটরসাইকেল আরোহীর গায়ে লেগে পোশাক নোংরা হয়ে যাচ্ছে।
কুটিপাড়া এলাকার বাসিন্দা আবদুল জোব্বার সরকার বলেন, সামান্য বৃষ্টি হলে দুর্ভোগের কোনো সীমা থাকে না। গর্তের পানি ছিটকে কাপড় নষ্ট হচ্ছে।
একই এলাকার রিকশাচালক সোহেল মিয়া (৩৫) নিজের ভাষায় বললেন, ‘ভাঙা আসতা দিয়া একসা চলাতে হামারঘরে জীবোন চলি যাবার নাগচে। পোত্তেক দিন একসার এসপোক (যন্ত্র) নসটো হবার নাগচে। তাও সোরকার আসতাকোনা ভালো করে না।’
সৃজনশীল গাইবান্ধা নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রধান মেহেদী হাসান জানান, সংগঠনের উদ্যোগে গত ২৪ সেপ্টেম্বর সড়ক মেরামতের দাবিতে গাইবান্ধা সওজের নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। এরপরও সড়কটি মেরামত করা হচ্ছে না।
এ প্রসঙ্গে সওজের গাইবান্ধা কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আসাদুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, শহরের রেলগেট থেকে কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার অংশে চার লেন কাজের বিষয়ে আদালতে মামলা চলমান। এ কারণে এই অংশে কাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি। রেলগেট থেকে পুরোনো বাজার পর্যন্ত অবশিষ্ট অংশে অচিরেই কাজ শুরু হবে।