জিডিতে আলেয়া উল্লেখ করেছেন, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি করোনার প্রথম ডোজ টিকা দেওয়ার জন্য ছেলে গিয়াসউদ্দিনকে সখীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেদিন টিকার নিবন্ধন কার্ড চিকিৎসককে দেখাচ্ছিলেন। ওই মুহূর্তে পেছনে তাকিয়ে দেখেন ছেলে নেই। এর পর থেকে ছেলে নিখোঁজ। নিকট আত্মীয়ের বাড়িসহ সখীপুরের বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ করেছেন। ছেলেকে পাননি।
এরপর আলেয়া আজ বুধবার সকালে প্রথম আলোর প্রতিবেদকের কাছে আসেন ছেলের সন্ধান পেতে সহায়তার আকুতি নিয়ে। তিনি বলেন, তাঁর বিয়ে হয়েছিল উপজেলার ইছাদিঘী গ্রামে। স্বামীর মৃত্যুর পর থেকে তিনি কালিদাস গ্রামের দড়িচালা এলাকায় বাপের বাড়িতে আছেন। তাঁরা দুই বোন ও তিন ভাই, কারও তেমন ভালো চলে না। ছেলেকে নিয়ে কাজ করে সরকারি জমিতে একটি ঘরও তুলেছেন। এলাকার জনপ্রতিনিধিরা বিধবা কার্ডও করে দিয়েছেন। এভাবে মা-ছেলের দিন কোনোরকমে চলে যাচ্ছিল।
আলেয়া বলেন, ‘ছেলের সমস্যা বলতে শুধু কথা কম বলত। সব ধরনের কাজ করত। আমার সঙ্গে কাজে যেত। মাটিকাটার কাজ করে আমাকে টাকা এনে দিত। দেড় কিলোমিটার দূরে থেকে বাজারসদাই করে একাই বাড়ি ফিরত। এই বয়স পর্যন্ত কোনো দিন চোখের আড়াল হয়নি। একা কাজে গেলে অন্যরা হাতে টাকা গুঁজে দিত। হিসাব বুঝত না বলে কোনো কথা বলত না। আমাকে ছাড়া কোনো দিন ঘুমায়নি ছেলে।’ আলেয়ার গলা ভিজে আসে। চোখের পানিও গড়িয়ে পড়ে। তিনি বলেন, ‘ছেলেকে হারিয়ে পাগল হয়ে গেছি। রাতে ঘুমাতে পারি না। খালি ছেলের কথা মনে পড়ে। রান্নাবান্নাও করতে পারি না। এই ঈদেও কোনো রান্না করিনি। ছেলে নাই, কাকে রান্না করে খাওয়াব?’
কালিদাস ইউপির ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য শফিকুল ইসলাম বলেন, ছেলেটা শুধু কথা কম বলত। তবে প্রচুর কাজ করত মায়ের সঙ্গে। হারানোর পরই এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে মাইকিং করা হয়েছে। পরে থানায় জিডি করা হয়। কেউ সন্ধান পেলে গরিব মায়ের উপকার হয়।
এ ব্যাপারে সখীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম প্রথম আলোকে বলেন, ওয়ারলেসের মাধ্যমে সারা দেশের থানায় বার্তাটি পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। ছেলেটিকে খোঁজার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।