দুই মাস পর খুলনায় সর্বনিম্ন মৃত্যু, কমেছে রোগীর চাপ
করোনাভাইরাসের ডেলটা ধরন শনাক্ত হওয়ার পর থেকে খুলনায় প্রায় প্রতিদিনই হাসপাতালগুলোয় ৫ থেকে ২৫ জন পর্যন্ত করোনা রোগী মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। গতকাল শনিবার সকাল আটটা থেকে আজ রোববার সকাল আটটা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দুটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন দুইজন। করোনা ডেডিকেটেড বাকি তিনটি হাসপাতালে ওই সময়ের মধ্যে কোনো করোনা রোগীর মৃত্যু হয়নি। গত দুই মাসের মধ্যে হাসপাতালগুলোয় এটাই সর্বনিম্ন মৃত্যুর ঘটনা বলে খুলনা সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে।
এটা নিয়ে টানা ১০ দিন খুলনায় করোনা রোগীর মৃত্যুর সংখ্যা দুই অঙ্কের নিচে থাকল। আগের দিন একই সময়ে ওই হাসপাতালগুলোয় ৯ জনের মৃত্যু হয়েছিল। হাসপাতালগুলোয় যে দুই করোনা রোগী মারা গেছেন, তাঁরা দুজনই নারী। একজনের বয়স ৪২ ও অন্যজনের বয়স ৫৫ বছর।
খুলনা মহানগরে পাঁচটি হাসপাতালে করোনা রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হয়। এর মধ্যে দুটি বেসরকারি হাসপাতাল। ওই হাসপাতালগুলোয় করোনা রোগীদের জন্য মোট শয্যা রয়েছে ৫৬৫টি। এর মধ্যে সরকারি হাসপাতালগুলোয় শয্যা রয়েছে ৩২৫টি। গত ১৫ দিন আগেও যেখানে শয্যার চেয়ে রোগীর সংখ্যা বেশি ছিল, বর্তমানে সেখানে বেশ কিছু শয্যা খালি পড়ে আছে। তবে দুটি সরকারি হাসপাতালে থাকা ৩০টি আইসিইউ শয্যা কখনো খালি পড়ে থাকছে না।
হাসপাতালগুলোর দৈনিক প্রতিবেদন থেকে দেখা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতাল ও বেসরকারি গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক জন করে মারা গেছেন। ওই সময়ের মধ্যে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিচতলায় অবস্থিত ২০০ শয্যার করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট খুলনা সদর (জেনারেল) হাসপাতাল ও বেসরকারি সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কোনো রোগীর মৃত্যু হয়নি। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোয়ও কেউ মারা যাননি।
খুলনা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্যানুযায়ী, খুলনার দুটি হাসপাতালে যে দুই করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে তার মধ্যে ১ জন খুলনা জেলার, অন্যজনের বাড়ি বাগেরহাটে। এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৬৭টি নমুনা পরীক্ষা করে ১৩০টি নমুনায় করোনাভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। সংক্রমণের ওই হার ২৭। এর আগের দিন সংক্রমণ ছিল ২১ শতাংশ।
রোগী ভর্তির তথ্য থেকে দেখা গেছে, আজ শনিবার সকাল পর্যন্ত ২০০ শয্যার ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতালে রোগী ভর্তি আছেন ১২৮ জন। এর মধ্যে করোনায় আক্রান্ত রোগী আছেন ৫৬ জন ও করোনা উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসাধীন রোগী আছেন ৪০ জন। এ ছাড়া ওই হাসপাতালে থাকা ২০টি এইচডিইউতে রোগী ভর্তি আছেন ১২ জন। আর ২০টি আইসিইউ শয্যার সব কটিই পরিপূর্ণ।
এদিকে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট খুলনা সদর (জেনারেল) হাসপাতালে (৮০ শয্যার করোনা ইউনিট) বর্তমানে ভর্তি রয়েছেন ৩০ করোনা রোগী। গত ২৪ ঘণ্টায় ওই হাসপাতাল থেকে পাঁচজন ও দুইজন ছাড়পত্র নিয়েছেন।
খুলনার শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালে ১০টি আইসিইউসহ ৪৫টি শয্যার করোনা ইউনিটে বর্তমানে রোগী ভর্তি রয়েছেন ৩৫ জন। তবে কোনো আইসিইউ শয্যা খালি নেই। গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে চার করোনা রোগী ভর্তি ও চার জন ছাড়পত্র নিয়েছেন।
বেসরকারি গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনা রোগীদের চিকিৎসায় প্রস্তুত করা ১৫০টি শয্যার বিপরীতে সেখানে রোগী ভর্তি আছেন ৪৮ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে রোগী ভর্তি হয়েছেন ছয়জন ও ছাড়পত্র নিয়েছেন সাতজন।
খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রয়েছে ৯০টি শয্যা। বর্তমানে সেখানে রোগী ভর্তি রয়েছেন ৬৯ জন। ২৪ ঘণ্টায় সেখানে ৭ জন ভর্তি ও ১১ জন ছাড়পত্র নিয়েছেন।