মালিকানা নিয়ে জটিলতা
দেড় বছরেও সরেনি উপড়ে পড়া গাছ, চাষাবাদে বিঘ্ন
চৌগাছা-ঝিকরগাছা সড়কের পলুয়া এলাকায় এক কিলোমিটারের মধ্যে ২০টি গাছ ফসলি জমিতে পড়ে আছে।
দেড় বছর আগে ঘূর্ণিঝড় আম্পানে সড়কের পাশের গাছ ফসলি জমিতে উপড়ে পড়ে। গাছের মালিকানা নিয়ে জটিলতা থাকায় দীর্ঘদিনেও এ রকম ২০টি গাছ সরানো হয়নি। এতে গাছগুলো পচে নষ্ট হচ্ছে। আবার সেখানকার জমিও অনাবাদি পড়ে থাকছে।
এ ঘটনা যশোরের চৌগাছা উপজেলার সীমান্তবর্তী পলুয়া গ্রামের। চৌগাছা-ঝিকরগাছা সড়কের পলুয়া এলাকায় এক কিলোমিটারের মধ্যে ২০টি গাছ ফসলি জমিতে পড়ে আছে।
চৌগাছা উপজেলার সীমান্তবর্তী গ্রাম পলুয়া। চৌগাছা সদর থেকে ঝিকরগাছা সদরে যেতে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) অধীন একটি সড়ক রয়েছে। সড়কটি পলুয়া গ্রামের মধ্য দিয়ে চলে গেছে। এই সড়কের দুই পাশে এলজিইডির অধীনে ছোট–বড় অসংখ্য গাছ রয়েছে। পলুয়া গ্রামের মধ্যে সড়কের পাশের বেশির ভাগ গাছই রেইনট্রি। সেখানকার বড় একটি গাছের দাম ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত। ২০২০ সালের মে মাসে ঘূর্ণিঝড় আম্পানের আঘাতে ওই এলাকায় গাছের ব্যাপক ক্ষতি হয়।
পলুয়া গ্রামের বাসিন্দা নজরুল ইসলাম বলেন, ওই সময়ে সড়কের অনেক স্থানে বড় বড় গাছ উপড়ে পড়েছিল। কিছু গাছ রাস্তার ওপরে ও কিছু গাছ চাষের জমিতে পড়ে। ঝড়ের পর রাস্তার ওপর পড়ে থাকা গাছগুলো অপসারণ করা হয়। স্থানীয় বাসিন্দারাও অনেক গাছের ডাল কেটে নিয়ে যান। কিন্তু চাষের জমিতে পড়ে থাকা গাছগুলো কেউ সরিয়ে নেয়নি।
নজরুল ইসলাম আরও বলেন, হেলে পড়া গাছগুলো শুকিয়ে গেছে। অনেকে জ্বালানির জন্য গাছ কেটে নিয়ে গেছেন। এখনো ১ কিলোমিটারের মধ্যে প্রায় ২০টি গাছ পড়ে আছে। গাছগুলো পড়ে আছে কৃষকের ধানিজমিতে, যাতে চাষাবাদে ব্যাঘাত ঘটছে।
ওই গ্রামের বাসিন্দা আবদুল কুদ্দুসের জমিতে দুটি গাছ পড়ে আছে। তিনি বলেন, গাছগুলো সরিয়ে নেওয়ার জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে ধরনা দিয়েছেন। কিন্তু কোনো ফল পাননি। এই গাছের কারণে জমিতে ঠিকমতো চাষাবাদ করা যাচ্ছে না। গাছগুলো উপড়ে পড়ায় রাস্তার ক্ষতি হচ্ছে। অনেক স্থানের মাটি ধসে আছে, যা চলাচলের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।
চৌগাছা উপজেলা প্রকৌশলী মনছুর রহমান বলেন, গাছগুলো এলজিইডি লাগিয়েছে। কিন্তু জেলা পরিষদ গাছের মালিকানা দাবি করেছে। এ কারণে তাঁরা গাছগুলো অপসারণ করতে পারছেন না। রাস্তার ওপর গাছ পড়ে থাকলে তাঁরা লোকবল নিয়োগ করে রাস্তা পরিষ্কার করেন। হেলে পড়া গাছের কারণে সড়কের ক্ষতি হচ্ছে। গাছগুলো অপসারণ করা জরুরি।
এ বিষয়ে যশোর জেলা পরিষদের সংশ্লিষ্ট এলাকার সদস্য হবিবর রহমান বলেন, গাছগুলো অপসারণের জন্য তাঁরা চেষ্টা করে যাচ্ছেন। অল্প দিনের মধ্যে দরপত্র হবে ও গাছগুলো অপসারণ করা হবে।