দেড় শ ফুট চওড়া খালে ৪০ ফুটের সেতু

সেতুর সংযোগ সড়ক নেই। এ ছাড়া সেতুর দুই পাশে কাঁচা বা পাকা সড়ক নির্মাণ করা হয়নি।

খালটির প্রস্থ অন্তত দেড় শ ফুট। কিন্তু খালের ওপর ৪০ ফুট দৈর্ঘ্যের সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। খালের মাঝামাঝি সেতুটির অবস্থান। এর দুই দিকেই পানি। নেই কোনো সংযোগ সড়ক। ফলে সেতুটি কোনো কাজেই লাগছে না। এ ঘটনা ফরিদপুরের সালথা উপজেলার ভাওয়াল ইউনিয়নে। ওই ইউনিয়নের তুঘলদিয়া গ্রামে বেদাখালী খালের ওপর সেতুটির নির্মাণকাজ শেষ হয় গত বছর জুনে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের সেতু ও কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ৩০ লাখ ৭৭ হাজার টাকা ব্যয়ে সেতুটি নির্মাণ করা হয়। সেতুর এক পাশে ভাওয়াল ইউনিয়নের তুঘলদিয়া গ্রাম ও তুলঘদিয়া বাজার এবং অন্য পাশে মাঝারদিয়া ইউনিয়নের কুমারপট্টি গ্রাম।

প্রায় দেড় শ ফুট প্রশস্ত খালের ওপর মাত্র ৪০ ফুট দৈর্ঘ্যের সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। এখানে সেতুর সংযোগ সড়ক নেই। এ ছাড়া সেতুর দুই পাশে কাঁচা বা পাকা সড়ক নির্মাণ করা হয়নি। ফলে এলাকার লোকজন পাট, পেঁয়াজ, ধান বা অন্যান্য ফসল যানবাহনে করে সেতুর ওপর দিয়ে চলাচল করতে পারছে না। সড়ক না থাকায় কোনো রোগী ও আহত মানুষকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া যায় না। সেতুর দুই পাশের নিচু বাঁধ বর্ষার পানিতে তলিয়ে গেলে হেঁটেও চলাচল করা সম্ভব হয় না।

কুমারপট্টি গ্রামের বাসিন্দা রেজাউল করিম (৫৫) বলেন, ১৫০ ফুট চওড়া খালের ওপর ৪০ ফুট লম্বা সেতু করা হয়েছে। এটি দিয়ে একটি মোটরসাইকেলও পার হতে পারে না। এলাকার মানুষের ব্যবহারের জন্য সেতুটি করা হয়েছে। কিন্তু সেতুটি এলাকাবাসীর তেমন কোনো কাজে আসছে না।

খালের পূর্ব পাড়ে মাঝারদিয়া ইউনিয়নের কুমারপট্টি গ্রামের বাসিন্দা ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রুস্তম আলী বলেন, ‘এ সেতু এলাকাবাসীর কোনো কাজে আসছে না। বড় একটি সেতু প্রয়োজন। এত বড় একটি খালে এতটুকু একটি সেতু কইরা আমাদের বিপদের মুখে ফেলা হয়েছে। এটা একটা বাজে কাজ হয়েছে। আমরা এখানে একটি বড় সেতু চাই।’

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) পরিতোষ বড়ই বলেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের সেতু ও কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্পের কাজগুলো সাধারণত স্থানীয় সাংসদ কিংবা তাঁদের প্রতিনিধিদের সুপারিশের ভিত্তিতে করা হয়ে থাকে। এ ক্ষেত্রেও ঘটনাটি ঘটেছে। এই প্রকল্পের অধীনে ৪০ ফুটের বেশি দৈর্ঘ্যের সেতু নির্মাণের সুযোগ নেই।

ভাওয়াল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ফারুকুজ্জামান ফকির মিয়া বলেন, ওই এলাকায় একটি সেতুর প্রয়োজন ছিল। এলজিইডির কাছে বহু ধরনা দিয়ে কোনো কাজ হয়নি। সেতুটি নির্মাণ করার জন্য যখন উদ্যোগ নেওয়া হয়, তখন তিনি ইউপি চেয়ারম্যান ছিলেন না। দ্রুত ওই জায়গায় একটি বড় সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।