ধনাগোদায় কচুরিপানার জট, নৌ চলাচল ব্যাহত
চাঁদপুরের ধনাগোদা নদীর চরমাছুয়া থেকে কালিপুরবাজার পর্যন্ত ৩৫ কিলোমিটার এলাকা কচুরিপানায় ছেয়ে গেছে। এতে ওই নদীতে লঞ্চ, কার্গো, ট্রলারসহ অন্যান্য নৌযানের চলাচল বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। প্রায়ই বিকল হচ্ছে নৌযানের ইঞ্জিন। নৌযানচালকেরা বলছেন, কচুরিপানার জন্য যাতায়াত করতে সময় বেশি লাগছে। অথচ কচুরিপানার জট সরাতে উদ্যোগ নিচ্ছে না কর্তৃপক্ষ।
সম্প্রতি সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ধনাগোদা নদীর মতলব উত্তর উপজেলার চরমাছুয়া, লক্ষ্মীপুর, গাজীপুর, এনায়েতনগর, নন্দলালপুর, দুর্গাপুর ও কালিপুরবাজার এবং মতলব দক্ষিণ উপজেলার খেয়াঘাট, বাইশপুর, মাছুয়া খাল, শাহাপুর ও নায়েরগাঁও অংশ ঘুরে দেখা যায়, নদীতে ছেয়ে গেছে কচুরিপানা। লঞ্চ, কার্গো, নৌকা ও ট্রলার ধীরে ধীরে চলছে।
মতলব দক্ষিণের খেয়াঘাট এলাকার নৌকার মাঝি মো. শিপন মিয়া বলেন, ‘প্রত্যেক দিন সকাল থেইক্কা গভীর রাত পর্যন্ত কস্তুরি ঠেইল্লা নৌকায় যাত্রীগো পারাপার করি। এ পাড় থেইক্কা ও পাড়ে যাইতে ১০ মিনিটের বদলে ৪০-৫০ মিনিট চইলা যায়। কস্তুরি ঠেলতে ঠেলতে জানের কিছু থায়ে না। অনেক দিন ধইরাই এই সমস্যা। দেহনের কেউ নাই।’
মতলব দক্ষিণ-ঢাকা নৌপথে চলাচলকারী যাত্রীবাহী লঞ্চ ‘গ্রিন ওয়াটার’ এর চালক মো. মহিন মিয়া বলেন, তাঁর লঞ্চটি সকাল সাড়ে সাতটায় মতলব থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেয়। স্বাভাবিক সময়ে দুপুর সাড়ে ১২টার মধ্যে ঢাকায় পৌঁছানো যায়। এক মাস ধরে ধনাগোদা নদীর ৩৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে রাশি রাশি কচুরিপানা। এগুলোর দাপটে ঠিকমতো লঞ্চ চালানো যাচ্ছে না। এখন ঢাকায় পৌঁছাতে বেলা দুইটা বেজে যায়। কচুরিপানা পেঁচিয়ে প্রায়ই লঞ্চের ইঞ্জিন ও পাখা বিকল হয়। তখন অর্ধেক পথেই লঞ্চ আটকে থাকে। বিষয়টি প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।
মতলব উত্তর উপজেলার ফতেপুর এলাকার শিক্ষার্থী আরিফ মৃধা বলেন, নৌকায় ধনাগোদা পার হয়ে তাঁকে কলেজে আসতে হয়। কচুরিপানার জটে নদী পারাপারে অনেক সময় চলে যায়।
মতলব দক্ষিণ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাহমিদা হক বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সহযোগিতা নিয়ে ওই নদীর কচুরিপানা অপসারণে পদক্ষেপ নেবেন।
মতলব উত্তরের ইউএনও গাজী শরিফুল হাসান বলেন, নদীটির কচুরিপানা সরাতে একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। আগামী জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় সেটি পাস হওয়ার পর বরাদ্দ পাওয়া যাবে। তখন কচুরিপানা দূর করার কাজ শুরু হবে।