ধর্ষণের ভিডিও ছড়ানোয় তরুণীর ‘আত্মহত্যা’, গ্রেপ্তার ইউপি সদস্য রিমান্ডে

গ্রেপ্তার ইউপি সদস্য আবদুল মোমেন
ছবি: প্রথম আলো

নারায়ণগঞ্জের বন্দরে তরুণীকে ধর্ষণের ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়া ও আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলায় গ্রেপ্তার ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য আবদুল মোমেনকে (৪৯) দুই দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শামসুর রহমানের আদালত হাজির করে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন জানালে শুনানি শেষে আদালত দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এর আগে সোমবার রাতে বন্দর থানার পুলিশ বালিয়াগাঁও এলাকা থেকে আবদুল মোমেনকে গ্রেপ্তার করে। এ ছাড়া এই মামলার এজাহারভুক্ত আসামি দবিরকে আলীনগর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তবে ধর্ষণের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত নুরুল আমিনসহ অন্য আসামিদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি।

নারায়ণগঞ্জ আদালত পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, তরুণীকে আত্মহত্যার প্ররোচনা এবং ধর্ষণের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে ইউপি সদস্য আবদুল মোমেনসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন ওই তরুণীর মা। ওই মামলায় গ্রেপ্তার ইউপি সদস্য আবদুল মোমেনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আদালত তাঁর দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।

মামলার আসামিরা হলেন নুরুল আমিন (৪২), শিমলী আক্তার (৩৮), ইউপি সদস্য আবদুল মোমেন (৫২), পলাশ মিয়া (৩০), মো. ইস্রাফিল (৩৫), বাবুল মিয়া (৪৫), আরমান আলী (৪০) ও দবির উদ্দিন (৪৫)।

ভুক্তভোগী তরুণীর মা বলেন, তাঁর মেয়েকে যিনি ধর্ষণ করলেন, সেই ধর্ষককে পুলিশ এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি। যাঁদের কারণে তাঁর মেয়ে আত্মহত্যা করলেন, তাঁদের পুলিশ গ্রেপ্তার করছে না। অভিযুক্ত নুরুল আমিন দেশেই আত্মগোপনে আছেন। অবিলম্বে নুরুল আমিনসহ জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি।

বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দীপক চন্দ্র সাহা প্রথম আলোকে বলেন, ইউপি সদস্যকে দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। মামলার এজাহারভুক্ত অপর আসামি দবিরকে মঙ্গলবার দুপুরে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত আসামি নুরুল আমিনসহ অন্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

আরও পড়ুন

এলাকাবাসী ও পুলিশ জানায়, দুই বছর ধরে উপজেলার বালিয়াগাঁও এলাকার নুরুল আমিন ওই তরুণীকে বিয়ের কথা বলে ধর্ষণ করেন। একপর্যায়ে বিয়ের জন্য চাপ দিলে নুরুল আমিন অস্বীকার করেন। এরপর ধর্ষণের অভিযোগ এনে ২ জুন থানায় মামলা করেন ওই তরুণীর মা। এরপর বিষয়টি নিয়ে ৫ জুন এলাকায় সালিস হয়। সেখানে তরুণীকে ধর্ষণের ভিডিও সবার সামনে প্রদর্শন ও ফেসবুকে ভাইরাল করার হুমকি দেওয়া হয়। পরবর্তী সময়ে ওই ভিডিও আসামিরা ভাইরাল করে দেন। এরপর সোমবার সকালে নিজ ঘর থেকে ওই তরুণীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।