পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঝলকি খাতুন প্রায় ১৮ বছর ধরে ঢাকার একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করেন। তাঁর স্বামী জিল্লুর রহমান প্রতিবন্ধী ছেলে মিলন রহমানকে নিয়ে গ্রামের বাড়িতে ভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। ঝলকি ঈদের ছুটিতে গতকাল দুপুরে স্বামীর বাড়িতে আসেন। প্রায় তিন মাস আগে প্রতিবেশী এক বিধবা নারীকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগে জিল্লুর রহমানের পরিবারকে সমাজচ্যুত করার ঘোষণা দেন যুবদলের নেতা রুহুল আমিন। এতে রুহুল আমিনের ওপর ক্ষুব্ধ হন জিল্লুর রহমান। গতকাল বেলা ১১টার দিকে বাড়ির সীমানা নিয়ে প্রতিবেশীর সঙ্গে দীর্ঘদিনের বিরোধ–মীমাংসার জন্য জিল্লুর রহমানের বাড়িতে রুহুল আমিনের নেতৃত্বে সালিস বৈঠক বসে। ওই বৈঠকে হাতাহাতির একপর্যায়ে ক্ষুব্ধ জিল্লুর রহমানের ছুরিকাঘাতে আহত হন রুহুল আমিন।

এলাকার বাসিন্দারা আরও জানান, রুহুল আমিন ছুরিকাহত হওয়ার পর এলাকায় গুজব ছড়িয়ে পড়ে, রুহুল আমিন মারা গেছেন। এতে তাঁর সমর্থকেরা ক্ষুব্ধ হয়ে জিল্লুর রহমান, ছেলে মিলন রহমান ও ছোট ভাই মিজানুর রহমানকে পিটিয়ে আহত করেন। এ সময় স্বামী-সন্তান ও দেবরকে বাঁচাতে গিয়ে প্রতিপক্ষের মারপিটে আহত হন ঝলকি খাতুন। পরে হাসপাতালে তিনি মারা যান।

একই সময়ে ছুরিকাহত রুহুল আমিন, তাঁর স্ত্রী নাছিমা খাতুন, প্রতিবেশী লিটন ও সোহেল রানাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। রাত নয়টার দিকে ঝলকির মারা যাওয়ার খবর পেয়ে পুলিশ যুবদলের নেতা রুহুল আমিন ও প্রতিবেশী লিটন মিয়াকে আটক করে। আজ মামলা দায়েরের পর তাঁদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

রুহুল আমিন আটক অবস্থায় প্রথম আলোকে বলেছিলেন, ‘সালিস বৈঠকে ছুরিকাঘাতে আমার মৃত্যুর খবরে গ্রামবাসী জিল্লুর রহমান ও তাঁর পরিবারের লোকজনকে মারপিট করেছেন। আমি কাউকে মারধর করিনি।’

ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কৃপা সিন্ধু বালা বলেন, ঝলকি খাতুনকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগে করা মামলার প্রধান আসামি রতন ও লিটন নামের দুজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।