ধুমধাম করে অনাথ মেয়েটির বিয়ে দিলেন গ্রামবাসী

রিপা খাতুন-রতন আলী দম্পতি
ছবি: প্রথম আলো

রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার দৌলতপুর গ্রামের রিপা খাতুনের (১৮) বাবা মারা যান তাঁর ছোটবেলায়। মায়ের মৃত্যু হয় বছর ছয়েক আগে। অনাথ রিপার ঠাঁই হয় স্থানীয় ‘মদিনাতুল মনোয়ারা বালিকা হাফেজিয়া কওমি মাদ্রাসা ও লিল্লাহ বোডিং’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানে। সেখানে তাঁর থাকা ও পড়াশোনার ব্যবস্থা করা হয়। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ও গ্রামের লোকজন মিলে ধুমধাম করে আজ বৃহস্পতিবার রিপার বিয়ে দেন। পাত্র পাশের ভরট্ট লিখড়াপাড়া গ্রামের রতন আলী।

যে মাদ্রাসায় রিপার বেড়ে ওঠা, সেই মাদ্রাসার পাশেই তাঁর বিয়ের আয়োজন করা হয়। বিয়ে উপলক্ষে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় লোকজন নিজ উদ্যোগে লক্ষাধিক টাকা দামের একটি ষাঁড় ও ছাগল কেনেন। সুন্দর করে সাজানো হয় অনুষ্ঠানস্থল। খাবারের তালিকায় ছিল পোলাও, মাংস ও মিষ্টি।

বিয়েতে আসা অতিথিরা অনাথ এক তরুণীর বিয়ে উপলক্ষে এত সুন্দর আয়োজন করায় মুগ্ধতার কথা জানান। স্থানীয় বাসিন্দা ইসাহাক আলী প্রথম আলোকে বলেন, তাঁদের এলাকায় এত বড় আয়োজনে বিয়ে কমই হয়েছে। স্থানীয় সবার সহযোগিতায় সবকিছু সম্ভব হয়েছে।

এই বিয়ে অনুষ্ঠানের প্রধান আয়োজক স্থানীয় বাসিন্দা ব্যবসায়ী মোজাম্মেল হক বলেন, তিনি রিপাকে নিজের মেয়ের মতো দেখেন। নিজ দায়িত্বে তিনি এলাকার লোকজনের সহায়তা নিয়ে রিপার বিয়ের ব্যবস্থা করেন।

কনে রিপা খাতুন এমন আয়োজনে আনন্দিত। তিনি বলেন, ‘এমন ধুমধাম বিয়ের আয়োজন হবে, আগে ভাবতে পারিনি। মাদ্রাসা ছুটি হলে সব শিক্ষার্থী বাড়িতে যেত। আমার যাওয়ার কোনো জায়গা ছিল না। মা-বাবা ও আপনজন না থাকায় মাদ্রাসাকে ঠিকানা হিসেবে ব্যবহার করতাম।’

বর রতন আলী বলেন, তিনি সব জেনেই রিপাকে বিয়ে করছেন। এমন মেয়েকে বউ হিসেবে পেয়ে তিনি নিজেকে ভাগ্যবান বলে মনে করছেন।