নদীতেই ঈদ কাটে কার্গো জাহাজের শ্রমিকদের

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার মেঘনা নদীতে নোঙর করে রাখা পণ্যবাহী কার্গো জাহাজ । সম্প্রতি তোলা।
ছবি : প্রথম আলো

ঈদের আগে শিকড়ের টানে অধিকাংশ মানুষ নিজেদের জন্মভিটায় গেলেও মালবাহী নৌযানের মাস্টার (চালক) ও শ্রমিকদের ঈদের দিন কাটে নদী বা সাগরে।

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার বিভিন্ন শিল্পকারখানার পণ্যবাহী কার্গো জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দর, মোংলা বন্দর ও সিলেট-সুনামগঞ্জ থেকে পাথর বালু সিমেন্টসহ বিভিন্ন মালামাল নিয়ে কয়েক দিন ধরে মেঘনা নদীতে নোঙর করে রেখেছে। ফলে এসব কার্গো জাহাজের শ্রমিকদের নদীতে ঈদ কাটাতে হবে।

নোঙর করে রাখা এসব নৌযানের মাস্টার, সুকানি ও শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতিবছরের মতো ঈদের দিন তাঁরা নদীতেই উদ্‌যাপন করবেন। কারণ, নদীতে জাহাজ ফেলে রেখে প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে বাড়িতে যাওয়া সম্ভব নয়।

আজ শনিবার দুপুরে সোনারগাঁয়ের মোগরাপাড়া চৌরাস্তা বাজারের গরু, মুরগি ও খাসির দোকানে দেখা যায়, নৌযানের শ্রমিকেরা মাংস, পোলাও, চাল ও সেমাই কিনছেন।

এমভি মেঘনা সুপার নামের একটি কার্গো জাহাজের মাস্টার নবির হোসেন বলেন, ‘বিভিন্ন নদী ও সাগরে আমাদের ঈদ উদ্‌যাপন করতে হয়। কোরবানি ঈদে সবার ঘরে ঘরে মাংস রান্না হলেও কোরবানি দেওয়া গরুর মাংসের স্বাদ নিতে পারি না। জাহাজের শ্রমিক কর্মচারীদের মনকে কিছুটা হলেও চাঙা রাখতে আমরা ঈদের আগের দিন মাংস কিনছি। ঈদের পরে মালামাল খালাস করার পর ছুটিতে বাড়িতে গিয়ে পরিবার–পরিজনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করব।’

এমভি নার্গিস নামের অপর একটি কার্গো জাহাজের মাস্টার আলী হোসেন বলেন, ‘২০ বছর ধরে আমি জাহাজের মাস্টারের দায়িত্ব পালন করছি। বছরের প্রায় ১০ মাস নদীতেই আমাদের থাকতে হয়। ঈদের সময় অধিকাংশ নৌযানশ্রমিকেরই নদীতে ও সাগরে ঈদ করতে হয়। চাকরিজীবনের ২০ বছরের মধ্যে ১৭টি ঈদই আমি নদীতে করেছি।’

মেঘনা গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক (কারিগরি) কার্তিক চন্দ্র দাস বলেন, ‘আমাদের কোম্পানি প্রতিবছরই কারখানার ভেতরে গরু কোরবানি দেওয়ার ব্যবস্থা করে। আমরা কারখানার শ্রমিকদের সঙ্গে সমহারে নৌযানের শ্রমিকদের মধ্যেও কোরবানির মাংস বিতরণ করার ব্যবস্থা করে থাকি।’