নারায়ণগঞ্জে বকেয়া বেতন-বোনাসের দাবিতে পোশাকশ্রমিকদের অনশন
বকেয়া বেতন, ঈদ বোনাসসহ বিভিন্ন দাবিতে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজী ইপিজেডের একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা তিন ঘণ্টার অনশন পালন করেছেন। আজ মঙ্গলবার নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে ‘বেকা গার্মেন্টস অ্যান্ড টেক্সটাইল মিলের’ শ্রমিকেরা এই কর্মসূচি পালন করেন।
বেকা গার্মেন্টস অ্যান্ড টেক্সটাইল মিলের সাড়ে ছয় শ শ্রমিক কাজ করেন। সেখানকার কয়েকজন জানান, তাঁদের ফেব্রুয়ারি, মার্চ ও এপ্রিল—এই তিন মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। বকেয়া বেতনের দাবিতে ঈদের আগে থেকে শ্রমিকেরা আন্দোলন করে আসছেন। কিন্তু বেতন না দিয়ে গত ১৩ এপ্রিল অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানা বন্ধ করে দেয় মালিকপক্ষ। এর পর থেকে শ্রমিকেরা আন্দোলনে নামেন।
ঈদের দিন মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় কারখানাটির শ্রমিকেরা নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে অনশন কর্মসূচি শুরু করেন। এ সময় শ্রমিকদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতন, গার্মেন্টস শ্রমিক কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আহসান হাবীব, বাসদের সমন্বয়ক নিখিল দাস, সদস্যসচিব আবু নাঈম, গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের কেন্দ্রীয় সভাপতি মন্টু ঘোষ, জেলা সিপিবি সভাপতি হাফিজুল ইসলাম, গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্টের জেলা সভাপতি সেলিম মাহমুদ প্রমুখ।
বেলা আড়াইটার দিকে পানি পানের মাধ্যমে শ্রমিকদের অনশন কর্মসূচি শেষ হয়। এ সময় জানানো হয়, একই দাবিতে ১০ মে ঢাকায় বেপজা চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে মিছিল নিয়ে যাবেন শ্রমিকেরা।
কারখানার মেশিন অপারেটর আবুল কাশেম বলেন, বেতন-বোনাস না পেয়ে শ্রমিকেরা বাড়ি যেতে পারেননি। দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে এলেও তাঁদের পাওনা পরিশোধের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। অবিলম্বে তাঁদের বকেয়া পাওনা, ঈদ বোনাস ও বন্ধ কারখানা চালু করার দাবি জানান তিনি।
এ ব্যাপারে কারখানার পরিচালক অভিক ডায়াসের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।
শিল্প পুলিশ-৪–এর পরিদর্শক (গোয়েন্দা) বশির আহমেদ বলেন, কারখানার মালিক পলাতক। তাঁর সঙ্গে কোনোভাবেই যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। শ্রমিকদের পাওনার বিষয়ে বেপজা সিদ্ধান্ত নেবে।
এর আগে গত ২১ এপ্রিল বেকা গার্মেন্টস অ্যান্ড টেক্সটাইল মিলের শ্রমিকেরা একই দাবিতে কারখানার সামনে বিক্ষোভ করেন। একপর্যায়ে তাঁরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করার চেষ্টা করলে পুলিশ তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। ২০ এপ্রিল কারখানার সামনে শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন।