নির্ধারিত সময়ে নির্মাণ শেষ হওয়া নিয়ে শঙ্কা

গত বছরের জুনে কাজ শুরু হয়েছে। এক বছর মেয়াদি প্রকল্পটির কাজ শেষ হয়েছে ৩০ শতাংশ।

বরিশাল নগরের ত্রিশ গোডাউন এলাকায় নির্মাণ করা হচ্ছে আধুনিক খাদ্য সংরক্ষণ গোডাউন। গত শুক্রবার তোলা
ছবি: প্রথম আলো

ভূমিসংক্রান্ত জটিলতার কারণে পাঁচ বছর পিছিয়ে গিয়েছিল বরিশালে আধুনিক খাদ্যগুদাম (সাইলো) নির্মাণের কাজ। এরপর গত বছরের জুনে কাজ শুরু হলেও তা চলছে ধীরগতিতে। এক বছর মেয়াদি প্রকল্পটির কাজ শেষ হয়েছে ৩০ শতাংশ। এতে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্মাণকাজ শেষ হওয়া নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।

বরিশালে বহুল প্রতীক্ষিত আধুনিক খাদ্যগুদামটির নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০২১ সালের ২২ জুন। ৩১৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নগরের কীর্তনখোলা নদীসংলগ্ন ত্রিশ গোডাউন এলাকায় সাড়ে ৫ একর জমির ওপর এ আধুনিক খাদ্য সংরক্ষণাগার নির্মাণ করা হচ্ছে। ২০২৩ সালের ২১ আগস্ট কাজ সম্পন্ন হওয়ার সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। এ পর্যন্ত ৩০ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করছে যৌথ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কনফিডেন্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড বাংলাদেশ এবং দ্য জিএসআই গ্রুপ, এলএলসি-ইউএসএ।

এ খাদ্যগুদামে প্রায় ৪৮ হাজার মেট্রিক টন চাল কীটনাশক ব্যবহার ছাড়াই দুই থেকে তিন বছর পুষ্টিমান বজায় রেখে মজুত করা সম্ভব হবে। কৃষি বিভাগ বলছে, বরিশালসহ দক্ষিণ উপকূলে প্রতিবছর ধানের উৎপাদন ইতিবাচক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমন, আউশ ও বোরো মিলিয়ে তিন মৌসুম ধরে প্রায় ৪০ লাখ মেট্রিক টন ধান উৎপাদিত হয়েছে। আধুনিক সংরক্ষণ ব্যবস্থা না থাকায় এসব ধান উত্তরের জেলাগুলোয় চলে যায়। এরপর তা চাল হয়ে আবার দক্ষিণের জেলাগুলোয় ফিরে আসে। এতে বেশি দামে চাল কিনতে হয় এ অঞ্চলের মানুষকে। ঝড়, জলোচ্ছ্বাসসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগপ্রবণ দক্ষিণ উপকূলে খাদ্য মজুতের বিষয়টি ঝুঁকিপূর্ণ। প্রতিবছর গুদামেই পচে যায় বিপুল পরিমাণ চাল। আধুনিক এই খাদ্য সংরক্ষণাগারটি নির্মিত হলে এসব সমস্যার সমাধান হবে।

২০১৫ সালের মাঝামাঝি বরিশাল নগরের ত্রিশ গোডাউনসংলগ্ন পুকুর ভরাট করে এ সাইলো নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। পুকুরে বালু ফেলে বেশ কিছু অংশ ভরাটও করা হয়েছিল। তবে স্থানীয় সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সাইলো নির্মাণ প্রকল্পটি স্থগিত করে খাদ্য মন্ত্রণালয়। এরপর ত্রিশ গোডাউনের পশ্চিমাংশে সোজা কীর্তনখোলা তীর পর্যন্ত এ সাইলো নির্মাণ করার কাজ শুরু হয়।

বরিশাল কেন্দ্রীয় খাদ্য সংরক্ষণাগারের ব্যবস্থাপক আয়শা খাতুন বলেন, সাইলো নির্মাণের জন্য তাঁরা ত্রিশ গোডাউনের ভেতরে সাড়ে পাঁচ একর জমি দিয়েছেন। এটি নির্মিত হলে বরিশাল অঞ্চলে খাদ্য মজুতের আর কোনো সংশয় ও সংকট থাকবে না।

গত শুক্রবারে দেখা যায়, নগরের ত্রিশ গোডাউনে সাইলোর নির্মাণকাজ চলছে। মূল কাঠামো নির্মাণের জন্য সেখানে পাথর, রডসহ অন্যান্য নির্মাণসামগ্রী স্তূপ করে রাখা হয়েছে। এখনো সাইলোর মূল কাঠামো দৃশ্যমান নয়।

খাদ্য সংরক্ষণাগার নির্মাণ প্রকল্পের কারিগরি বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ বলেন, করোনা পরিস্থিতি ও নানা জটিলতায় সাইলো নির্মাণের কাজে কিছুটা ধীরগতি আছে। তবে যত দ্রুত সম্ভব, কাজ এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চলছে।