ষষ্ঠ ধাপে অনুষ্ঠেয় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহে বাধা দেওয়ার অভিযোগে কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের সামনে মানববন্ধন করেছেন।
মনোহরগঞ্জ উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহে বাধা দেওয়ার অভিযোগ আজ শুক্রবার বেলা ১১টায় এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে নেতা-কর্মীরা চেয়ারম্যান, সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্যপদে নির্বাচন কমিশন থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ ও জমা দেওয়ার ব্যবস্থা করার অনুরোধ জানান। এর আগে গত বুধবার তাঁরা প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে একই দাবিতে স্মারকলিপি দেন।
উপজেলা আওয়ামী লীগের অন্তত পাঁচজন নেতা বলেন, স্থানীয় সাংসদের অবৈধ হস্তক্ষেপে ষষ্ঠ পর্বের ইউপি নির্বাচনে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহে বাধা দেওয়া ও এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের নীরবতার প্রতিবাদে শুক্রবার এ মানববন্ধন করা হয়েছে।
মানববন্ধন চলার সময় সরষপুর ইউপির চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী উপজেলা যুবলীগের সাবেক সদস্যসচিব গোলাম সারোয়ার বলেন, ‘আমরা জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করেছি। প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছেও আবেদন করেছিলাম। কোনো কাজ হয়নি। আমরা ট্রেজারি চালান কেটে বসে আছি। কিন্তু মনোনয়ন ফরম নিতে পারছি না।’
মানববন্ধনে অংশ নেন ঝলম উত্তর ইউনিয়নের সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থী মনোহরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন, সরষপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সদস্য জসিম উদ্দিন, বিপুলাসার ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান, বিপুলাসার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহফুজুর রহমান, লক্ষ্মণপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা ও সৌদি আরবের রিয়াদ শাখা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল বাতেন, বাইশগাঁও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য মো. তোফায়েল আহাম্মদ, আবু বক্কর প্রমুখ।
এর আগে গত বুধবার দুপুরে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া আট ব্যক্তি সন্ত্রাসীদের দিয়ে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ ও জমায় বাধা দেওয়ার অভিযোগ এনে স্মারকলিপি দেন। স্মারকলিপিতে তাঁরা নির্বাচন কমিশন ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার দপ্তর থেকে ফরম সংগ্রহ ও জমা দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।
এদিকে শুক্রবার দুপুরে সরষপুর ইউপির চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করতে গিয়ে বাধার সম্মুখীন হন গোলাম সারোয়ারের সহধর্মিণী ফাতেমা বেগম। উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার দপ্তরের সামনে এ ঘটনা ঘটে। আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের কয়েকজন নেতা-কর্মী এ বাধা দেন বলে অভিযোগ করেন ফাতেমা। তিনি বলেন, ‘আমি আমার স্বামীর পক্ষে ফরম সংগ্রহ করতে গেলে আমাকে বাধা দেওয়া হয়। আপত্তিকর মন্তব্য করা হয়।’
জানতে চাইলে মনোহরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জাকির হোসেন বলেন, ‘আওয়ামী লীগ চেয়ারম্যান ও মেম্বার পদে একক প্রার্থী দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে এখনো আমরা একক প্রার্থী চূড়ান্ত করিনি। কাউকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ ও জমা দেওয়ায় বাধা দিচ্ছি না আমরা। যাঁরা অভিযোগ করছেন, দল ও এলাকায় তাঁদের কোনো জনসমর্থন নেই।’
১৮ ডিসেম্বর ষষ্ঠ ধাপের ইউপি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, ৩ জানুয়ারি পর্যন্ত মনোহরগঞ্জ উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ ও জমা দেওয়া যাবে। ১৩ জানুয়ারি মনোনয়ন ফরম প্রত্যাহারের শেষ দিন। নির্বাচন ৩১ জানুয়ারি।