উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে নীলফামারীর বিভিন্ন চরের মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে
ছবি: প্রথম আলো

উজান থেকে নেমে পাহাড়ি ঢলে নীলফামারীতে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। শুক্রবার সকাল নয়টায় লালমনিরহাট জেলার দোয়ানীতে তিস্তা ব্যারাজ এলাকায় তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। পানি বাড়ায় নীলফামারী জেলার বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্র জানায়, লালমনিরহাট জেলার দোয়ানীতে তিস্তা ব্যারাজ এলাকায় তিস্তা নদীর পানি বৃহস্পতিবার বেলা ৩টায় বিপৎসীমার ২৫ সেন্টিমিটার নিচে ও বুধবার ৫৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। কিন্তু শুক্রবার তিস্তা নদীর পানি বাড়লে জেলার ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই, খগাখড়িবাড়ি, টেপাখড়িবাড়ি, খালিশা চাঁপানী, ঝুনাগাছ চাঁপানী ও গয়াবাড়ি ইউনিয়নের তিস্তা নদীবেষ্টিত প্রায় ১৫টি চর প্লাবিত হয়। এতে ১০ সহস্রাধিক পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছ।

এর আগে চলতি বছরের ৯ জুলাই তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার সর্বোচ্চ ৩০ সেন্টিমিটার ওপরে ওঠে। এরপর পানি কখনো বাড়ছে, আবার কখনো কমছে। পানি ওঠানামার কারণে ভাঙছে ফসলি জমি, বাড়িঘর ও বন্যা প্রতিরক্ষা বাঁধ।

ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবদুল লতিফ খান বলেন, বন্যা পরিস্থিতির উন্নতির পর বৃহস্পতিবার রাত থেকে তিস্তায় আবারও ঢল আসতে থাকে। সকাল নয়টা পর্যন্ত ইউনিয়নের পূর্ব ছাতনাই ও ঝাড়সিংহের স্বর চরের ১ হাজার ১৫০ পরিবার বন্যাকবলিত হয়ে পড়ে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় অনেকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে আসছে।

ডিমলা উপজেলার ঝুনাগাছ চাঁপানী ইউপি চেয়ারম্যান মো. আমিনুর রহমান বলেন, ‘আমার ইউনিয়নের প্রায় এক হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।’


এ বিষয়ে পাউবো ডালিয়া ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আসফাউদদৌলা বলেন, উজানের ঢলে তিস্তা নদীর পানি বাড়ছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে তিস্তা ব্যারাজের সব কটি (৪৪টি) জলকপাট খুলে রেখে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। শুক্রবার সকাল ৯টায় তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
পাউবোর ডালিয়া ডিভিশনের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র সূত্র জানায়, তিস্তা ব্যারাজের দোয়ানী এলাকায় শুক্রবার তিস্তা নদীর পানি সকাল ৬টায় ৫২ দশমিক ৯০ মিটার, সকাল ৯টায় ৫২ দশমিক ৯৫ মিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। ওই পয়েন্টে তিস্তা নদীর বিপৎসীমা ৫২ দশমিক ৬০ মিটার।