নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুরে এক নারীকে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত দুই আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। আজ বুধবার দুপুরে নোয়াখালীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক জয়নাল আবেদীনের আদালতে এ বিষয়ে শুনানি হয়।
দুই আসামি হলেন দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ার হোসেন ও তাঁর সহযোগী আবুল কালাম। এর আগে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পড়ে শোনান রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি মামুনুর রশিদ। এ সময় আসামিরা নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন। অভিযোগ গঠনের শুনানিতে আদালতে আসামিপক্ষে কোনো আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন না।
আদালত আসামিদের কাছে আইনজীবী নিয়োগ না করার বিষয়ে জানতে চান। উত্তরে আসামি দেলোয়ার হোসেন আদালতকে জানান, কোনো আইনজীবী তাঁদের পক্ষে আদালতে দাঁড়াতে রাজি হচ্ছেন না। একজন আইনজীবী বলেছেন, আদালত অনুমতি দিলে তিনি দাঁড়াবেন।
এ সময় আদালত বলেন, এ বিষয়ে অনুমতির প্রয়োজন নেই। যেকোনো আইনজীবী আসামির পক্ষে আদালতে দাঁড়াতে পারেন। তবে আদালতের পক্ষ থেকে এই মামলায় আসামির পক্ষে স্টেট ডিফেন্স হিসেবে আইনজীবী নিয়োগ করা হবে না। রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি মামুনুর রশীদ আদালতের সিদ্ধান্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলায় বাদীপক্ষে আদালতে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও জেলা বারের সাবেক সভাপতি মোল্লা হাবিবুর রাছুল। তাঁকে সহায়তা করেন বাংলাদেশ মহিলা আইনজীবী সমিতির পক্ষে আয়েশা বেগম শিরিন, শাহিদা আক্তার, ছালেহা বেগম ও কল্পনা রানী দাশ। এ সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন লেখক ও শিক্ষক রেহনুমা আহমেদ।
গত বছরের ২ সেপ্টেম্বর রাতে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের একলাশপুরে বসতঘরে এক নারীকে (৩৭) ধর্ষণের চেষ্টা করেন দেলোয়ার হোসেনসহ দেলোয়ার বাহিনীর সদস্যরা। একপর্যায়ে তাঁরা ওই নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ভিডিওচিত্র ধারণ করেন, যা ৩১ দিন পর ৪ অক্টোবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে এবং সারা দেশে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
ওই সময় ঘটনাটির তদন্তকালে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের পরিচালক (অভিযোগ ও তদন্ত) আল-মাহমুদ ফয়জুল কবীরের কাছে ওই নারী অভিযোগ করেন, দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ারের হাতে তিনি এর আগে দুবার ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। তাঁকে ওই কাজে সহায়তা করেছে আবুল কালাম। পরে ওই ঘটনায়ও বেগমগঞ্জ থানায় ধর্ষণের মামলা করেন নির্যাতনের শিকার নারী। ওই মামলায় দেলোয়ার ও আবুল কালামের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিয়েছে তদন্তকারী সংস্থা পিবিআই।
আদালত প্রাঙ্গণে আসামিদের কটূক্তি
নারীকে নির্যাতন ও ধর্ষণের ঘটনায় হওয়া মামলা দুটির ধার্য তারিখ ছিল আজ। উভয় মামলায় অভিযুক্ত ১৪ জন আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। আদালতে আসামিদের হাসিখুশি দেখা যায়। দুপুরে আদালতের কার্যক্রম শেষে আসামিদের কোর্ট হাজতে নেওয়ার পথে তাঁরা আদালত প্রাঙ্গণে উপস্থিত মানবাধিকারকর্মীদের উদ্দেশে কটূক্তি করেন।