নৌকার পাল্লা সামান্য ভারী, বিদ্রোহীদেরও দাপট

১৫টি ইউপির মধ্যে ছয়টিতে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর মধ্যে পাঁচজন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী এবং অন্যজন বিএনপির রাজনীতিতে যুক্ত।

নির্বাচন
প্রতীকী ছবি

তৃতীয় দফায় মাগুরার দুই উপজেলার ১৫টি ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে ৯টিতে জয় পেয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীরা। বাকি ছয়টিতে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর মধ্যে পাঁচজন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী হিসেবে এবং অন্যজন বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত।

শান্তিপূর্ণ এই নির্বাচনে একটি ইউপিতে নৌকার প্রার্থী পঞ্চম হয়েছেন। অন্য একটি ইউনিয়নে মাত্র সাত ভোটের ব্যবধানে জয় পেয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীরা। ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে প্রায় প্রতিটি ইউনিয়নেই হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছে। যেখানে শতকরা ভোটের হার গড়ে ৭৭ দশমিক ২৯।

গত রোববার মহম্মদপুর উপজেলার আটটি এবং শালিখায় সাত ইউপিতে ভোট গ্রহণ হয়। যেখানে মহম্মদপুরে চারটি ও শালিখায় পাঁচটি ইউপিতে নৌকার প্রার্থীরা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। দুই উপজেলায় নৌকার প্রার্থীরা যেসব ইউনিয়নে পরাজিত হয়েছেন সেগুলো হচ্ছে মহম্মদপুরের পলাশবাড়িয়া, নহাটা, রাজাপুর, মহম্মদপুর সদর এবং শালিখার আড়পাড়া ও শালিখা সদর ইউপি। এর মধ্যে মহম্মদপুর সদর, পলাশবাড়িয়ায় ও শালিখা উপজেলার শালিখা ইউপির নৌকার প্রার্থীর ভরাডুবি হয়েছে। মহম্মদপুরে সাতজন চেয়ারম্যান প্রার্থীর মধ্যে নৌকা প্রতীকের রাবেয়া বেগম পঞ্চম এবং পলাশবাড়িয়ায় আলাউদ্দিন মাহামুদ ও শালিখার বাবলু হোসেন তৃতীয় হয়েছেন। যেখানে মহম্মদপুরে ইকবাল আখতার, পলাশবাড়িয়াতে সৈয়দ সিকান্দার আলী নামে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী এবং শালিখায় বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত স্বতন্ত্র প্রার্থী আলী হুসাইন শিকদার জয়ী হয়েছেন।

ভরাডুবির কারণ জানতে চাইলে মহম্মদপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল মান্নান গতকাল সোমবার মুঠোফোনে বলেন, ‘একটি ইউনিয়নে অর্থের কাছে নৌকার প্রার্থী পরাজিত হয়েছেন। অন্য একটিতে প্রার্থী অসুস্থ ছিলেন। যে কারণে জনগণের আস্থা অর্জন করা যায়নি।’ স্থানীয় নির্বাচন নিয়ে দলের মধ্যে বিভক্তির কথাও স্বীকার করেন তিনি।

মাগুরায় সবচেয়ে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছে মহম্মদপুরের বালিদিয়া ইউপিতে। যেখানে মাত্র সাত ভোটের ব্যবধানে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মফিজুর রহমান চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর ৬ হাজার ৮১৬ ভোটের বিপরীতে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান চেয়ারম্যান পান্নু মিয়া পেয়েছেন ৬ হাজার ৮০৯ ভোট। তিনি আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন। গত ইউপি নির্বাচনে এই পান্নু মিয়ার কাছে পরাজিত হয়েছিলেন মফিজুর রহমান।

অন্যদিকে শালিখা আড়পাড়া ইউপিতে টানা তৃতীয়বারের মতো চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন আরজ আলী বিশ্বাস। তবে আওয়ামী লীগের এই নেতা তিনবারই লড়েছেন দলের মনোনীত প্রার্থীর বিপক্ষে। এবার বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় শালিখা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে তাঁকে বহিষ্কার করা হয়।

বলেন, ‘আমরা আওয়ামী লীগ করি। বহিষ্কার করা হোক আর যাই করা হোক এই দলেই থাকব’। তিনি জানান, বরাবরের মতো এবারও দলের কাছে মনোনয়ন চেয়েছিলেন তিনি। জনপ্রিয়তা থাকা সত্ত্বেও কেন তাঁকে মনোনয়ন দেওয়া হয় না—এমন প্রশ্নের জবাবে এই নেতা বলেন, ‘মনোনয়নের ক্ষেত্রে হয়তো কোনো বাণিজ্য হয়। যেটা আমার কাছে চাইতে পারে না সম্ভবত’।