নড়বড়ে সাঁকোই ভরসা ছয় গ্রামের মানুষের

উপজেলার চর বগলা খালের ওপর নির্মিত সাঁকোটি বেশ নড়বড়ে। গাছ আর বাঁশ দিয়ে তৈরি এ সাঁকোয় দুই-তিনজন লোক উঠলেই দুলতে থাকে।

পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীর মৌডুবি ইউনিয়নের চরবগলা খালের ওপর নির্মিত সাঁকোটি বেহাল। ঝুঁকি নিয়ে চলছে লোকজন
ছবি: প্রথম আলো

পটুয়াখালীর রাঙাবালি উপজেলার মৌডুবি ইউনিয়নের চর বগলা খালের ওপর নির্মিত সাঁকোটি বেশ নড়বড়ে। গাছ আর বাঁশ দিয়ে তৈরি এ সাঁকোয় দুই-তিনজন লোক উঠলেই দুলতে থাকে। এ সাঁকো দিয়েই প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে পার হচ্ছে ছয় গ্রামের মানুষ। এতে দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন গ্রামবাসী।

স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, মৌডুবি ইউনিয়নের হাফেজকান্দা, বাইলাবুনিয়া, বলিকান্দা, খাসমহল, ভূঁইয়াকান্দা ও চর বগলা গ্রামের মানুষ চর বগলা খাল নৌকায় পার হয়ে উপজেলা শহরে যাতায়াত করেন। প্রায় ২০ বছর আগে নিজেদের অর্থায়নে গ্রামবাসী নিজেরাই চর বগলা খালের ওপর বাঁশ ও গাছ দিয়ে সাঁকোটি নির্মাণ করেন।

গ্রামবাসীদের দুর্ভোগ কমলেও পুরোনো সাঁকোটি নড়বড়ে হয়ে পড়েছে। নিজেদের অর্থায়নে মেরামত করে কোনো রকমে চলাচলের উপযোগী করে রাখা হয়েছে। তবে সাঁকোটি নিয়মিত সংস্কার না করায় বর্তমানে এটি ব্যবহারে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।

সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা গেছে, সাঁকোটি বিভিন্ন প্রজাতির গাছ ও বাঁশ দিয়ে নির্মিত। আনুমানিক ৬০ মিটার দৈর্ঘ্যের সাঁকোটিতে পাটাতনে থাকা বাঁশ ও গাছের ডাল নড়বড়ে। বাঁশ সরে গিয়ে কয়েকটি স্থানে ফাঁকের সৃষ্টি হয়েছে। এতে সাঁকোটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। লোকজনের পারাপারের সময় সাঁকোটি হেলতেদুলতে থাকে। তারপরও লোকজন খুব সাবধানতার সঙ্গে সাঁকোটি দিয়ে পার হচ্ছেন।

খাসমহল গ্রামের আবদুল মালেক বলেন, জনস্বার্থে চর বগলা খালের ওপর সরকারিভাবে একটি সেতু নির্মাণ প্রয়োজন। এ সাঁকো দিয়ে
এখন আর চলাচল করা যায় না। লোকজন কোনোমতে পারাপার হন। করোনার কারণে স্কুল বন্ধ, তা না হলে শিশুশিক্ষার্থীদের পারাপারে চরম ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ত এটি।

ভূঁইয়াকান্দা গ্রামের জহির প্যাদা বলেন, এর আগে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের সময় প্রার্থীরা সবাই এ সাঁকো সরিয়ে সেতু নির্মাণের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলেছিলেন। কিন্তু কেউই তাঁদের কথা রাখেননি।

কয়েকজন গ্রামবাসী বলেন, সাঁকোটি ছয় গ্রামের সহস্রাধিক মানুষের যোগাযোগ সহজ করার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের যাতে নৌকায় পারাপার হতে না হয়, সে লক্ষ্যে তৈরি হয়েছিল। এ ছাড়া ছয় গ্রামের মানুষ নিজেদের উৎপাদিত সবজি, তরমুজসহ বিভিন্ন কৃষিপণ্য বাজারে সরবরাহে সাঁকোটি ব্যবহার করেন। কিন্তু এখন মানুষ পায়ে হেঁটে পার হতে পারলেও মালামাল নিয়ে সাঁকোটি পার হওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে।

মৌডুবি ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, আসলেই সাঁকোটি গুরুত্বপূর্ণ। জনদুর্ভোগ লাঘবে উপজেলা পরিষদের মাসিক সমন্বয় সভায় বিষয়টি উত্থাপন করা হবে।

এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির বলেন, সাঁকোটির স্থান পরিদর্শনসহ সেখানে একটি সেতু নির্মাণের ব্যাপারে প্রস্তাবনা পাঠানো হবে।

রাঙাবালি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাশফাকুর রহমান বলেন, বিষয়টি তিনি অবহিত হয়েছেন। সেখানে সেতু নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হবে।