পকেটে লুকিয়ে ব্যালট সরানোর অভিযোগে মামলা, প্রিসাইডিং কর্মকর্তা কারাগারে
কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার পূর্ব বড় ভেওলা ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে ২৮ নভেম্বর ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। ওই দিন ১৬১টি ব্যালট পেপার প্যান্টের পকেটে লুকিয়ে কেন্দ্রের বাইরে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ ওঠে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ও কলেজ অধ্যক্ষ মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে। কর্তব্যরত ম্যাজিস্ট্রেট তাঁকে ব্যালট পেপারসহ আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন। পরে তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কক্সবাজার জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এ ঘটনায় মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে গতকাল সোমবার রাতে চকরিয়া থানায় মামলা হয়। নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবের নির্দেশে মামলা করেন চকরিয়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা এবং পূর্ব বড় ভেওলা ও বদরখালী ইউপি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা সুপন নন্দী। আসামি মুজিবুর রহমান চকরিয়া বদরখালী কলেজের অধ্যক্ষ। তিনি মহেশখালী উপজেলার কালারমারছড়ার উত্তর নলবিলা গ্রামের বাসিন্দা।
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুহাম্মদ ওসমান গনি প্রথম আলোকে জানান, মামলার আসামি কলেজ অধ্যক্ষ মুজিবুর রহমানকে চকরিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত চলছে।
পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ভোটের দিন বেলা সাড়ে তিনটার দিকে পূর্ব বড় ভেওলা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর ভেওলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মুজিবুর রহমান কিছু ব্যালট পেপার পকেটে নিয়ে কেন্দ্রের বাইরে চলে যান। এ নিয়ে কেন্দ্রে দায়িত্বরত পোলিং এজেন্টদের সঙ্গে মুজিবুর রহমানের বাগ্বিতণ্ডা চলে। একপর্যায়ে তাঁর সঙ্গে ভোটারদের হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে। তখন ভোটকেন্দ্রে কর্তব্যরত ম্যাজিস্ট্রেটসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি সামাল দেন। বিকেল পৌনে চারটার দিকে ভোটকেন্দ্রের পশ্চিমের একটি ভবনের দ্বিতীয় তলার ৩ নম্বর পোলিং বুথের ভেতরে নিয়ে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মুজিবুরের প্যান্টের পকেট থেকে ১৬১টি অব্যবহৃত ব্যালট পেপার উদ্ধার করা হয়। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীর ৫১টি, সংরক্ষিত মহিলা প্রার্থীর ৬০টি এবং সাধারণ সদস্য পদের ৫৫টি ব্যালট পেপার ছিল।
পুলিশ ও স্থানীয় ভোটারদের ধারণা, প্রার্থীর পক্ষে কাজ করতে ব্যালট পেপার সরবরাহ করার কথা দিয়েছিলেন প্রিসাইডিং কর্মকর্তা। কথা অনুযায়ী ব্যালট পেপার সরবরাহ করতে গিয়ে তিনি হাতেনাতে ধরা পড়েন।
ঘটনাস্থল থেকে ব্যালট পেপারগুলো জব্দ করেন চকরিয়া থানার উপপরিদর্শক মো. ইকরামুল হক। তিনি জানান, প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মুজিবুর রহমানকে কেন্দ্র থেকে থানায় নিয়ে আটকে রাখা হয়। নির্বাচন কমিশন সচিবালয় থেকে মামলার অনুমতি পাওয়ার পর গতকাল রাতে তাঁর নামে মামলা করা হয়েছে।