পঞ্চগড়ে ছাত্রদল-যুবদলের ছয় নেতা–কর্মীর কারাদণ্ড
পঞ্চগড়ে হামলা ও ভাঙচুরের মামলায় ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের ছয়জন নেতা-কর্মীকে দুটি ধারায় পৃথক পৃথক তিন মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার দুপুরে পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মতিউর রহমান এই রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত নেতা-কর্মীরা হলেন পঞ্চগড় জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক এ টি এম হাসানুজ্জামান পলাশ (৪০), জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সদস্য মো. হায়াতুন (৩৩), জেলা যুবদলের সদস্য সাবুল হক (৩৭), হারুন অর রশিদ (৩৬), পৌর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক নুরে আলম (৩৭) ও জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আবু সাঈদ (৩০)।
বিকেলে দণ্ডপ্রাপ্ত ছয়জনের মধ্যে পাঁচজনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া দণ্ডপ্রাপ্ত নুরে আলম পলাতক।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালের ৪ ডিসেম্বর ১৮ দলীয় জোটের অবরোধ চলছিল। ওই দিন দুপুরে ১৮ দলীয় জোটের একদল নেতা-কর্মী অবরোধের সমর্থনে সংঘবদ্ধ হয়ে পঞ্চগড় শহরের এম আর কলেজ মোড় এলাকা থেকে লাঠি ও লোহার রড হাতে নিয়ে এবং ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে পঞ্চগড়-তেঁতুলিয়া মহাসড়কের দুই পাশে দোকানপাটে আঘাত করতে থাকেন। এ সময় তাঁরা সড়কে থেমে থাকা একটি পিকআপ ভ্যানের গ্লাস ভাঙচুর করেন এবং সড়কের পাশের দুটি বেসরকারি ব্যাংকের (ন্যাশনাল ব্যাংক ও ডাচ্–বাংলা ব্যাংক) গ্লাস ভাঙচুর করেন। এমনকি তাঁরা সড়কে জনসাধারণের চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন। খবর পেয়ে সদর থানা–পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে ভাঙচুরকারীরা পালিয়ে যান। এ ঘটনায় ওই দিনই সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবুল কালাম আজাদ বাদী হয়ে থানায় সাতজনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা ১৫ থেকে ২০ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন।
মামলাটি তদন্ত করে ২০১৪ সালের ৩১ মার্চ ১২ জনের নামে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সদর থানার এসআই নয়ন কুমার সাহা। এরপর দীর্ঘ বিচারপ্রক্রিয়ায় মামলায় সাতজন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।
বৃহস্পতিবার এই মামলায় অভিযুক্ত মোট ১২ জনের বিচারপ্রক্রিয়া শেষে মামলার দুটি ধারায় (৩৩৬ ও ১৪৩ ধারা) ছয়জন আসামিকে পৃথক পৃথক তিন মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন আদালত। এই সাজা একই সঙ্গে শুরু হওয়ায় দণ্ডপ্রাপ্তদের তিন মাস কারাভোগ করতে হবে। এ ছাড়া আসামিদের মধ্যে যাঁদের যত দিন হাজতবাস ছিল, তা এই সময় থেকে বাদ পড়বে বলে আদালত সূত্রে জানা গেছে। এ ছাড়া রায়ে অপর ছয়জন আসামিকে বেকসুর খালাস দেন আদালত।
মামলার রায় প্রদানের সময় দণ্ডপ্রাপ্ত পাঁচজন আসামি উপস্থিত ছিলেন। মামলার আসামিপক্ষের আইনজীবী আদম সুফি বলেন, ‘এই রায়ে আমরা ন্যায়বিচার পাইনি। রায়ের কপি হাতে পেলেই আমরা এই রায়ের বিরুদ্ধে জেলা জজ আদালতে আপিল করব।’