পদ্মায় ফের ভাঙন, ঝুঁকিতে শহর রক্ষা বেড়িবাঁধ

ভাঙনরোধে নদীতে বালুর জিও ব্যাগ ও টিউব ফেলা হচ্ছে। পাউবোর কর্মকর্তারা কাজ তদারক করছেন।

রাজবাড়ীতে শহর রক্ষা বাঁধে ভাঙন শুরু হয়েছে। ভাঙন ঠেকাতে বালুর বস্তা ফেলা হচ্ছে। গতকাল দুপুরেছবি: প্রথম আলো

রাজবাড়ীতে শহর রক্ষা বাঁধ সুরক্ষার জন্য ব্লক দিয়ে স্থায়ীভাবে পদ্মা নদীর তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে। তবে দুই মাস না যেতেই গতকাল শনিবার দুপুরে আবার নতুন করে ভাঙন শুরু হয়েছে। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে ভাঙন শুরু হয়। ভাঙনরোধে বালুর বস্তা ফেলা হচ্ছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা যায়, পদ্মা নদীর তীর স্থায়ীভাবে সংরক্ষণের জন্য ৩৭৬ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। প্রকল্পের আওতায় সাড়ে চার কিলোমিটার এলাকায় পদ্মা নদীর তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের কাজের ব্যয় ধরা হয়েছে ১৬৭ কোটি টাকা। এ ছাড়া একই এলাকায় ড্রেজিং করা হবে। ড্রেজিংয়ে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৩৫ কোটি টাকা। কাজের দায়িত্ব পেয়েছে মেসার্স দুলাল ব্রাদার্স লিমিটেড (ডিবিএল)। কাজ সম্পন্ন করার মেয়াদ ছিল ২০২০ সালের ৩১ মের মধ্যে। পরে কাজের মেয়াদ এক বছর বাড়ানো হয়। অন্যদিকে গোদার বাজার এলাকায় দেড় কিলোমিটার এলাকার সংস্কারকাজ ২০১৯ সালে শুরু হয়। কাজ শেষ হয় গত ৩১ মে।

সরেজমিনে দেখা যায়, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ও রাতে শুরু হওয়া তিনটি পয়েন্টের ভাঙন আপাতত বন্ধ রয়েছে। ইটভাটার পাশে গতকাল দুপুর থেকে নতুন করে ৩০ মিটার এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙনরোধে বালুর দুই ধরনের বস্তা ফেলা হচ্ছে—বালুর জিও ব্যাগ ও টিউব। শ্রমিকেরা বস্তায় বালু ভরে নদীতে ফেলছেন। পাউবোর কর্মকর্তারা কাজ তদারক করছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা মেহেদী হাসান অভিযোগ করেন, ব্লকের নিচে ৩০ মিটার গাইড ওয়াল (সুরক্ষা প্রাচীর) দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা দেওয়া হয়নি। স্থানীয়ভাবে একাধিকবার বলা হয়েছে। কাজে বাধাও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। নিচে গাইড ওয়াল না থাকায় স্রোতে ব্লকের নিচের বালু ধুয়ে যাচ্ছে। এতে ব্লক ধসে যাচ্ছে। যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করে কাজ করা হলে এই ভাঙন দেখতে হতো না। যেখানে ভাঙে, সেখানে বালুর বস্তা ফেলা হয়। কিন্তু যেখানে ভাঙে না, সেখানে বালুর বস্তা ফেলা হয় না।

স্থানীয় সাংসদ কাজী কেরামত আলী বলেন, ‘প্রতিবছর গোদার বাজার থেকে অন্তারমোড় পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকায় ভাঙন শুরু হয়। আবার দৌলতদিয়াও ভাঙে। আমাদের আতঙ্কে থাকতে হয়। কাজ শুরু করার সময় বলা হয়েছিল, এটি শত বছর স্থায়ী হবে। কিন্তু এখনই কেন ভেঙে গেল, তা ইঞ্জিনিয়ারের কাছে জানতে চেয়েছিলাম। তিনি বলেছেন, নকশা করার সময়ের চেয়ে এখন গভীরতা বেড়ে গেছে। আমি মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি ডিজাইন চেঞ্জ (নকশা বদল) করে দিতে চেয়েছেন।’

পাউবো নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবদুল আহাদ বলেন, এই নকশায় এখানে ভাঙন ঠেকানো যাবে না। এখানে নকশা পরিবর্তন করতে হবে।