পদ্মা সেতুর টাকা ১৫ বছরেই উঠে যাবে, জিডিপি বৃদ্ধি ২ শতাংশ ছাড়াবে

শরীয়তপুরে উগ্রবাদবিরোধী মতবিনিময় সভায় অতিথিদের সঙ্গে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম
ছবি: প্রথম আলো

মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেছেন, ‘পদ্মা সেতু চালু হলে জিডিপি (মোট দেশজ উৎপাদন) ১ দশমিক ৩ শতাংশ বৃদ্ধি পাওয়ার গবেষণা ছিল। এখন মনে হয়, সেটা ২ শতাংশ ছাড়িয়ে যাবে। পদ্মা সেতুর টাকা, যেটা ২৫ বছরে ফেরত আসার কথা; এখন দেখা যায়, সেটা ১৫-১৬ বছরে উঠে আসবে।’

শনিবার শরীয়তপুর পুলিশ লাইনসে ‘উগ্রবাদ প্রতিরোধে জনপ্রতিনিধি ও অন্যান্য অংশীজনের ভূমিকা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

উগ্রবাদবিরোধী মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম
ছবি: প্রথম আলো

অনুষ্ঠানে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘সেতু বিভাগ অর্থ বিভাগের সঙ্গে চুক্তি করেছে। ১ শতাংশ লভ্যাংশে এ টাকা (পদ্মা সেতুর টোল) ফেরত দেবে সরকারকে, যাতে ভবিষ্যতে আমরা এভাবে প্রকল্প করতে পারি।’

সেতুর মান ও নিরাপত্তা নিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘বিশ্বের একটি উচ্চ মানের সেতু হয়েছে পদ্মা সেতু। পদ্মা সেতুর গল্প শুনে এখন আমাজানে সেতু বানাতে আগ্রহ দেখায় বিদেশিরা। যদি ৮ মাত্রার ভূমিকম্প হয়, তখন যদি পিলারের নিচ থেকে ৬০–৬২ ফুট মাটি সরে যায়, তখন যদি পুরো সেতু রেলে ও যানবাহনে ওভারলোড থাকে এবং তখন ৫ হাজার মেট্রিক টনের একটা জাহাজ এসে পিলারে ধাক্কা দেয়, তখনো পদ্মা সেতুর কিছুই হবে না।’

আগামী মাসের শেষ সপ্তাহেই পদ্মা সেতু চালু হচ্ছে উল্লেখ করে খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে সম্মতি দিয়েছেন। তিনি এখন দিনক্ষণ ঠিক করবেন।

দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে জনপ্রতিনিধিদের ভূমিকা পালন করতে হবে উল্লেখ করে মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরও বলনে, ‘জনসাধারণকে বাস্তবতা বোঝাতে হবে। এক দিনের তেল দিয়ে দুই দিন রান্না করতে হবে। এক দিনের গ্যাস দিয়ে, লাকড়ি দিয়ে দুই দিন রান্না করতে হবে। আমি শুধু ক্রেডিট বোঝাব মানুষকে, আসল সমস্যা বোঝাব না, তাহলে তো হবে না। তাহলে তো মানুষ বিপদে পড়বে।’

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক পারভেজ হাসান। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার হোসেন, পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ, র‌্যাবের মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার খলিলুর রহমান, ঢাকা রেঞ্জ পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) হাবিবুর রহমান, শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার আশ্রাফুজ্জামান, ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান, শরীয়তপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেদুর রহমান প্রমুখ।

বাংলাদেশে উগ্রবাদ সম্পর্কে আইজিপি বেনজীর আহমেদ বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে, এ দেশের জনগণের সঙ্গে উগ্রবাদের কোনো সম্পর্ক নেই। উগ্রবাদ একটি বিজাতি সংস্কৃতি। দেশটাকে ধ্বংসের চক্রে ফেলার জন্য বাংলাভাইদের মতো জঙ্গীদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘আমরা জঙ্গীবাদ, সন্ত্রাসবাদ, উগ্রবাদ দমন করেছি। নির্মূল করার জন্য কাজ করছি। এসব দমন করেই বাংলাদেশ উন্নয়নের মহাসড়কে চলছে।’