পদ্মা সেতুর প্রভাবে ভবিষ্যতের চাপ সামলানোর সক্ষমতা বরিশাল নগরের নেই

‘পরিবেশ সুরক্ষায় সম্মিলিত উদ্যোগ’ নামে একটি নাগরিক সংগঠন এই নাগরিক সংলাপের আয়োজন করে
ছবি: প্রথম আলো

পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর বরিশাল নগরে যে হারে জনসংখ্যা, শিল্পকারখানা ও যানবাহনের চাপ বাড়বে, সেটা সামলানোর মতো সক্ষমতা যেমন নগরের নেই, তেমন কোনো প্রস্তুতিও নেই। এখনই প্রস্তুতি না নিলে বরিশাল নগর অচিরেই বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়বে। নগরের পরিবেশ-প্রতিবেশ সংরক্ষণে সাতটি খাল খননের জন্য যে বরাদ্দ এসেছে, সেগুলোর কাজ দ্রুত শুরু করা দরকার। আজ মঙ্গলবার বরিশালে এক নাগরিক সংলাপে বক্তারা এসব কথা বলেছেন।

দুপুরে নগরের কীর্তনখোলা নদীর তীঁরের ডিসিঘাট–সংলগ্ন একটি মিলনায়তনে নাগরিক সংলাপের আয়োজন করে ‘পরিবেশ সুরক্ষায় সম্মিলিত উদ্যোগ’ নামে একটি নাগরিক সংগঠন।

বীর মুক্তিযোদ্ধা মহিউদ্দিন মানিকের সভাপতিত্বে সংলাপে স্বাগত বক্তব্য দেন উন্নয়ন সংগঠক কাজী জাহাঙ্গীর কবির এবং সভা সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) বরিশাল বিভাগীয় সমন্বয়কারী মো. রফিকুল আলম ও নাছির উদ্দিন। সংলাপে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি চিকিৎসক সৈয়দ হাবিবুর রহমান, শিক্ষক জাহিদ হোসেন প্রমুখ বক্তব্য দেন।

সংলাপে বক্তারা বলেন, বরিশাল নগরের ২৪টি খালের অধিকাংশই এখন অস্তিত্বহীন। জলাশয়গুলোও দখলে-দূষণে নিঃশেষ হচ্ছে। কীর্তনখোলা নদী সংকটাপন্ন। এমন অবস্থায় অপরিকল্পিত নগরায়ণে বরিশালের পরিবেশ-প্রকৃতি আজ মারাত্মক হুমকিতে। পদ্মা সেতু চালু হলে নগরে মানুষের চাপ বাড়বে। কিন্তু এই চাপ সামলানোর জন্য কোনো পক্ষেরই পরিকল্পনা নেই। এ অবস্থায় নাগরিক সমাজ সোচ্চার না হলে অচিরেই এই নগর বসবাস অনুপযোগী হয়ে পড়বে। সে জন্য নাগরিক সমাজের সামাজিক আন্দোলনের বিকল্প নেই।

সংলাপে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা বেশ কয়েকটি সুপারিশ তুলে ধরেন। এর মধ্যে রয়েছে তীরবর্তী এলাকার দখলদারদের তালিকা প্রণয়ন করে উন্মুক্ত প্রকাশ করা এবং অবিলম্বে দখলমুক্তকরণ, নগরীর মধ্যে থাকা আটটি লাল তালিকাভুক্ত শিল্পকারখানার তরল রাসায়নিক বর্জ্য শোধনাগার (ইটিপি) ব্যবহারের মাধ্যমে শূন্যে নির্গমন করানো ও স্যাটেলাইট মনিটরিং করা, নদী-খালের সীমানা নির্ধারণ, প্লাস্টিক ও পলিথিনের ব্যবহার ধারাবাহিকভাবে শূন্যের ঘরে নিয়ে আসা, নগরীর বর্জ্য সংগ্রহ থেকে শুরু করে ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন, নগরীর পুকুর-জলাশয়ের সংখ্যা নির্ধারণসহ সংরক্ষণ, ড্রেনেজ ব্যবস্থার সমন্বিত উন্নয়ন ও জলাবদ্ধতা নিরসনের উদ্যোগ গ্রহণ, উন্মুক্ত স্থানের বিনোদন কেন্দ্র, অগ্নিনির্বাপণের যথাযথ সতর্ককরণ ব্যবস্থা ইত্যাদি।